সীমান্তে ভারতীয় পুশইন, বিজিবি বলছে ন্যাক্কারজনক!
ডেস্ক রিপোর্ট ॥ সীমান্তের নীরবতা আজ আতঙ্কের নাম। ভারতের দিক থেকে বাংলাদেশে রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশিদের ‘পুশইন’ কার্যক্রমকে সুপরিকল্পিত ও মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন হিসেবে বর্ণনা করেছেন বিজিবি মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী।সোমবার (১২ মে) সচিবালয়ে আইনশৃঙ্খলা-সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি জানান, গত ৭ ও ৮ মে দু’দিনে ২০২ জনকে সীমান্তে পাওয়া গেছে। যারা ভারতের বিভিন্ন অংশ থেকে বিএসএফের সহায়তায় বাংলাদেশে পুশইন করা হয়েছে। আশ্চর্যজনকভাবে, তাদের ফেলে যাওয়া হয়েছে জনমানবহীন অঞ্চলগুলোতে—যেখানে বিজিবির উপস্থিতি সীমিত।
ডিজি বলেন, “বিএসএফ এই পুশইন পরিকল্পিতভাবে করছে, এমন জায়গায় যেগুলো মনিটর করা কঠিন। অনেকেই ২০-২৫ বছর আগে ভারতে গিয়েছিলেন, অনেকে আধার কার্ড, স্থানীয় পরিচয়পত্র পেয়েছেন। অথচ এখন তাদের চুপিসারে ফেরত পাঠানো হচ্ছে।”
এর মধ্যে ৩৯ জন রোহিঙ্গা শনাক্ত হয়েছে, যাদের কেউ কেউ আগে বাংলাদেশে রেজিস্ট্রার্ড ছিল। আরও উদ্বেগজনক তথ্য হলো, পাঁচজন রোহিঙ্গার কাছে ভারতের ইউএনএইচসিআর-এর রেজিস্ট্রেশন কার্ড পাওয়া গেছে। “যাদের নিজ দেশে থাকার কথা, তাদের গোপনে ঠেলে দিচ্ছে প্রতিবেশী দেশ। এটা শুধু রাজনৈতিক সমস্যা নয়, মানবিক সংকটও,” বলেন আশরাফুজ্জামান।
বিজিবি বলছে, তারা ইতিমধ্যে পতাকা বৈঠকে কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছে। তবে বিএসএফ এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলছে, এসব মানুষ নিজেরাই ফিরে এসেছে। বিজিবি তা মানতে নারাজ।
তিনি জানান, খাগড়াছড়ির সীমান্তে এখনও ২০০-৩০০ জন অপেক্ষায় আছে যাদের পুশইনের চেষ্টা হয়েছিল। সুন্দরবনের দুর্গম মান্দারবাড়িয়া চরে জাহাজ থেকে নামিয়ে যাওয়া ৭৮ জনকেও কোস্টগার্ড উদ্ধার করেছে।
ডিজি বলেন, “সীমান্তের প্রতিটি স্পট শারীরিকভাবে নিরাপত্তা দেয়া সম্ভব নয়। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে বিএসএফ যা করছে তা বন্ধ হওয়া জরুরি।”
এ সময় তিনি আন্তর্জাতিক মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, “এভাবে যদি চলতে থাকে, তাহলে শুধু বাংলাদেশ নয়, এই অঞ্চলেই মানবিক সংকট আরও প্রকট হয়ে উঠবে।”
মতামত দিন