প্রবাসীদের ডলারে ঈদ-উৎসব, দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রেকর্ড
ডেস্ক রিপোর্ট ॥ আসন্ন কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সে বড় ধরনের উল্লম্ফন দেখা গেছে। সদ্য সমাপ্ত মে মাসে দেশে এসেছে ২৯৭ কোটি মার্কিন ডলার, যা দেশের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মাসিক রেমিট্যান্স হিসেবে রেকর্ড হয়েছে। টাকার অঙ্কে এর পরিমাণ প্রায় ৩৬ হাজার ২৩৪ কোটি টাকা।বাংলাদেশ ব্যাংক রোববার প্রকাশিত তথ্য বিবরণীতে জানায়, অর্থপাচার ও হুন্ডি প্রতিরোধে অন্তর্বর্তী সরকারের সক্রিয় ভূমিকার কারণে বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠানো বেড়েছে। প্রবাসীরা ব্যাংকিং চ্যানেলের ওপর আস্থা রাখায় এবং নানা প্রণোদনা কার্যক্রমের সুফল হিসেবে এ ধারা আরও ইতিবাচক হয়ে উঠেছে।
গত মার্চ মাসে দেশে সর্বোচ্চ ৩.২৯ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল। এরপর এপ্রিলেও ভালো পরিমাণ অর্থ দেশে আসে। মে মাসে প্রবাসীরা প্রতিদিন গড়ে ৯ কোটি ৫৮ লাখ ডলার পাঠিয়েছেন, যা প্রতিদিনের হিসাবে ১১৬৯ কোটি টাকারও বেশি। ঈদের আগে পরিবারের হাতে অর্থ তুলে দিতে এই প্রবাসী উদ্যোগই রেমিট্যান্স বৃদ্ধির মূল চালিকাশক্তি হয়ে উঠেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই থেকে মে—এই ১১ মাসে মোট রেমিট্যান্স এসেছে ২৭৫০ কোটি ৭০ লাখ ডলার, যা আগের বছরের তুলনায় ৬১৩ কোটি ৩০ লাখ ডলার বেশি। এতে বোঝা যায়, বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশিরা অর্থনীতিতে কতটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন।
মে মাসে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স এসেছে বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে, যার পরিমাণ ১৩৭ কোটি ১৬ লাখ ৮০ হাজার ডলার। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৬৬ কোটি ৫৩ লাখ ডলার এবং কৃষিভিত্তিক ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ২০ কোটি ৫০ লাখ ডলারেরও বেশি। এমনকি বিদেশি ব্যাংকের মাধ্যমেও এসেছে ৪১ লাখ ৩০ হাজার ডলার।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রেমিট্যান্সের এই প্রবাহ দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ শক্তিশালী করতে সাহায্য করছে। সরকারের সহায়তা ও ব্যাংকিং চ্যানেলের আধুনিকীকরণের ফলে প্রবাসীরা বৈধ পথে অর্থ পাঠাতে আগ্রহী হচ্ছেন।
এই প্রবণতা অব্যাহত থাকলে দেশের অর্থনৈতিক ভিত্তি আরও শক্তিশালী হবে বলে আশা প্রকাশ করছেন বিশ্লেষকরা।
মতামত দিন