আওয়ামী লীগের ১১ নেতাকর্মী গুলিস্তানে আটক
ডেস্ক রিপোর্ট ॥ রাজধানীর গুলিস্তানে ডিবি পুলিশের অভিযানে আওয়ামী লীগের ১১ নেতাকর্মীকে আটকের ঘটনা দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে উত্তেজনার জন্ম দিয়েছে। গত রোববার (১৮ মে) সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটে। আটকদের নাম ও পরিচয় এখনও প্রকাশ করা হয়নি। তবে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান এই আটকের বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।এই আটকের ঘটনার প্রকৃত কারণ এখনো জানা না গেলেও ধারণা করা হচ্ছে, এটি সাম্প্রতিক রাজনৈতিক নিষেধাজ্ঞার ধারাবাহিকতা। গত বছর আগস্টে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী-ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোর রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। ২০২৪ সালের নভেম্বরে ছাত্রলীগকেও একইভাবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। সর্বশেষ, ১২ মে জারি করা সরকারি প্রজ্ঞাপনে আওয়ামী লীগ এবং সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলোকে নিষিদ্ধ করার কারণ হিসেবে দলটির অতীত কর্মকাণ্ড, মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ এবং বিচার প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপের অভিযোগ তুলে ধরা হয়।
প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, ২০০৯ সাল থেকে ক্ষমতাচ্যুত হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসী কার্যকলাপ, গুম, খুন, নির্যাতনসহ নানাবিধ মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে জড়িত ছিল। এ ছাড়া রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে বিবেচিত হওয়ায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনের আওতায় দলটির সব কর্মকাণ্ড অবিলম্বে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
এদিকে, গুলিস্তানে নেতাকর্মীদের আটকের খবরে এলাকাজুড়ে চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে। এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃত্ব এ বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া দেয়নি। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই সিদ্ধান্ত দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার ওপর গুরুতর প্রভাব ফেলতে পারে।
বিশ্লেষকদের মতে, সরকারের এই কড়া অবস্থান দেশে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও গণতান্ত্রিক পরিবেশকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। তারা মনে করছেন, নিষেধাজ্ঞা দীর্ঘায়িত হলে সাধারণ জনগণের জীবনযাত্রা ও রাজনৈতিক মতাদর্শ চর্চা মারাত্মকভাবে প্রভাবিত হবে।
এখন প্রশ্ন উঠেছে, সরকারের এই পদক্ষেপ কি সত্যিই দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি ঘটাবে, না কি বিরোধী মত দমন করে দেশে আরও অস্থিরতা সৃষ্টি করবে?
মতামত দিন