শেখ হাসিনা-টিউলিপকে দেশে আনছে দুদক
ডেস্ক রিপোর্ট ॥ ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার ভাগ্নি টিউলিপ সিদ্দিককে দেশে ফিরিয়ে আনতে আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মঙ্গলবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদক কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ তথ্য নিশ্চিত করেন দুদক কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) হাফিজ আহসান ফরিদ।তিনি জানান, শেখ হাসিনা ও টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে একাধিক মামলা দায়ের হয়েছে। এসব মামলায় তারা অভিযুক্ত হওয়ায় আন্তর্জাতিক আইনি সহায়তা চেয়ে ‘মিউচুয়াল লিগ্যাল অ্যাসিস্ট্যান্স রিকোয়েস্ট (এমএলএআর)’ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। এটি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে বিদেশি দূতাবাস হয়ে সংশ্লিষ্ট দেশের বাংলাদেশ দূতাবাসে পাঠানো হবে বলে জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, গত বছরের আগস্টে ছাত্র ও জনতার গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যান। এরপর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর তার এবং তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে হত্যা, গুম, দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে একাধিক মামলা হয়।
দুদক কমিশনার জানান, রাজউকের একটি প্রকল্পে জালিয়াতির মাধ্যমে ১০ কাঠা করে মোট ৬০ কাঠা জমি আত্মসাতের অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে ছয়টি মামলা হয়েছে। এসব মামলার ভিত্তিতে তাদের দেশে ফিরিয়ে এনে বিচার কার্যক্রম চালানোই দুদকের লক্ষ্য। কমিশন ইতিমধ্যেই এ বিষয়ে সক্রিয়ভাবে কাজ শুরু করেছে।
টিউলিপ সিদ্দিকের ক্ষেত্রেও একই ধরনের প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হচ্ছে। তিনি বাংলাদেশের জাতীয় পরিচয়পত্র ও পাসপোর্টধারী হওয়ায় তাকে বিদেশি নাগরিক হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে না। তার বিরুদ্ধে করা মামলার নথিপত্র তার বাংলাদেশি ঠিকানাতেই পাঠানো হয়েছে।
রেড অ্যালার্ট জারির বিষয়ে জানতে চাইলে কমিশনার হাফিজ আহসান ফরিদ বলেন, এখনো এ বিষয়ে দুদকের অভ্যন্তরে কোনো আলোচনা হয়নি। তবে পরবর্তী কমিশন সভায় এই বিষয়ে আলোচনা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যদি চলতি সপ্তাহে আলোচনা না হয়, তাহলে আগামী সপ্তাহেই এটি আলোচনার টেবিলে আসবে বলে জানান তিনি।
এছাড়া শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক দুর্নীতি দমন সংস্থার সঙ্গে চুক্তির বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। চুক্তি সম্পন্ন হলে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা পাওয়ার আশা প্রকাশ করেন দুদক কমিশনার।
এই উদ্যোগের মাধ্যমে বহির্বিশ্বে অবস্থানরত অভিযুক্তদের বিচার প্রক্রিয়ায় অন্তর্ভুক্ত করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ নতুন এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে যাচ্ছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
মতামত দিন