রাজনীতি

জামায়াতের নিবন্ধন বৈধতা প্রশ্নে নতুন মোড়

ডেস্ক রিপোর্ট ॥ বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন বৈধ কি না, সেই প্রশ্নে নতুন করে আলোচনায় এসেছে দলটির রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ। সর্বশেষ রোববার (১ জুন) আপিল বিভাগ হাইকোর্টের জামায়াতের নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণার রায় বাতিল করেছে। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের বেঞ্চ এ রায় প্রদান করেন।

এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সচিব আখতার আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, আদালতের নির্দেশনা কমিশনে পৌঁছালে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তিনি আরও জানান, ইসি সব সময় আদালতের সিদ্ধান্তের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং যথাযথ প্রক্রিয়ায় পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন প্রথম দেওয়া হয় ২০০৮ সালের ৪ নভেম্বর, সাময়িক ভিত্তিতে। এরপর দলটির বিরুদ্ধে রিট দায়ের করেন বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন, জাকের পার্টি ও সম্মিলিত ইসলামী জোটের নেতৃবৃন্দ। তাদের দাবি ছিল, জামায়াতের গঠনতন্ত্র সংবিধানবিরোধী এবং যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্ত নেতাদের নেতৃত্বে দলটির বৈধতা প্রশ্নবিদ্ধ।

২০০৯ সালে হাইকোর্ট রুল জারি করে এবং একাধিকবার গঠনতন্ত্র সংশোধনের পরও ২০১৩ সালের ১ আগস্ট হাইকোর্ট জামায়াতের নিবন্ধনকে অবৈধ ঘোষণা করে। যদিও জামায়াত আপিল করেছিল এবং দীর্ঘ প্রক্রিয়া শেষে ২০২৩ সালের ১৯ নভেম্বর সেই আপিল খারিজ করে দেয় আপিল বিভাগ।

এরপর সরকারের পক্ষ থেকে ২০২৩ সালের আগস্টে জামায়াত ও তার অঙ্গসংগঠন নিষিদ্ধ করা হয়। তবে চলতি বছরের জানুয়ারিতে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর, ছাত্র-জনতা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে এবং নতুন সরকার গঠনের প্রেক্ষাপটে জামায়াতের নিষেধাজ্ঞা বাতিলের আবেদনও তোলা হয়।

এখন আপিল বিভাগের সর্বশেষ রায়ের ফলে জামায়াতের নিবন্ধন নিয়ে নতুন করে অবস্থান নিতে হবে নির্বাচন কমিশনকে। তবে আদালতের লিখিত রায় পাওয়ার আগ পর্যন্ত কমিশন কোনো সিদ্ধান্তে যাচ্ছে না বলেই জানিয়েছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই রায় শুধু জামায়াত নয়, দেশের রাজনীতিতেও দীর্ঘমেয়াদে প্রভাব ফেলতে পারে।

মতামত দিন