জাতীয় নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ চায় বিএনপি স্থায়ী কমিটি
ডেস্ক রিপোর্ট ॥ বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির পক্ষ থেকে অন্তর্বর্তী সরকারের নিরপেক্ষতা, উপদেষ্টা পরিষদের বিতর্কিত সদস্যদের অপসারণ এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে জাতীয় নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণার দাবিতে এক গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২২ মে) বিকেল ৪টায় গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।বিএনপির নেতৃবৃন্দ বলেন, দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে চলা ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলন ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদী সরকারের পতনের মধ্য দিয়ে শেষ হয়। তবে তারা প্রশ্ন তুলেছেন, গত ৯ মাসে সেই গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা ও জনগণের প্রত্যাশা কতটুকু বাস্তবায়িত হয়েছে?
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি অভিযোগ করে, অন্তর্বর্তী সরকারের নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। সরকারের কিছু উপদেষ্টা রাজনৈতিকভাবে পক্ষপাতদুষ্ট এবং নতুন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সরাসরি বা পরোক্ষভাবে জড়িত। তাদেরকে অব্যাহতি না দিলে সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে জনমনে সন্দেহ আরও গভীর হবে।
বিএনপি আরও দাবি করে, এই সরকারের প্রধান কাজ একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন। অথচ সরকারের মুখপাত্রদের বক্তব্যে দেখা যাচ্ছে, তারা সব বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার ম্যান্ডেট দাবি করছে। বিশেষ করে জাতীয় নিরাপত্তা, মানবিক করিডর এবং চট্টগ্রাম বন্দরের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোতে সরকার সিদ্ধান্ত নিচ্ছে যা জনগণের নির্বাচিত সরকারের এখতিয়ার বলে মনে করে বিএনপি।
এছাড়া, নির্বাচন কমিশনকে ঘিরেও নতুন করে বিতর্ক তৈরি হয়েছে বলে বিএনপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়। বিএনপি বলছে, আইনি প্রক্রিয়ায় গঠিত নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে অযথা প্রশ্ন তুলে এবং স্থানীয় সরকার নির্বাচনের দাবিতে নির্বাচন কমিশন ঘেরাও করার মাধ্যমে একটি মহল উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে অস্থিরতা তৈরি করতে চাইছে।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি পরিষ্কার জানিয়ে দেয়, যতক্ষণ পর্যন্ত অন্তর্বর্তী সরকার নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করবে এবং জনআকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটিয়ে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের রোডম্যাপ ঘোষণা করবে, ততক্ষণ তারা সরকারকে সহযোগিতা করবে। অন্যথায়, সরকারের প্রতি বিএনপির সহযোগিতা অব্যাহত রাখা কঠিন হয়ে পড়বে।
তারা বলেন, নির্বাচন ও সংস্কার একই সঙ্গে চলতে পারে। পাশাপাশি, ফ্যাসিবাদী শক্তি এবং মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিচারের প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে।
শেষে বিএনপি আশা প্রকাশ করে, দেশের স্থিতিশীলতা, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, বিনিয়োগ ও ব্যবসা-বাণিজ্যের উন্নয়নের স্বার্থে সরকার সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ঐক্যমতের ভিত্তিতে নির্বাচন পূর্ব সময় পর্যন্ত রাষ্ট্র পরিচালনায় কার্যকর ভূমিকা রাখবে।
মতামত দিন