রাজনীতি

গেরিলা প্রশিক্ষণে আওয়ামী নেতারা, ভারত থেকেও যুক্ত ছিল

ডেস্ক রিপোর্ট ॥ সম্প্রতি রাজধানীতে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হওয়া একটি চক্রের জবানবন্দির ভিত্তিতে উঠে এসেছে আওয়ামী লীগের কিছু নেতাকর্মীর গোপন গেরিলা প্রশিক্ষণের চাঞ্চল্যকর তথ্য। সরকার ও গোয়েন্দা সূত্র নিশ্চিত করেছে যে, প্রশিক্ষণ কার্যক্রম দেশ ও দেশের বাইরের একাধিক স্থানে পরিচালিত হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে ঢাকা, গোপালগঞ্জ, দিল্লি ও কলকাতা।

তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রশিক্ষণে অংশ নিয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী, যাদের অনেকেই বর্তমানে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। এছাড়া নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরাও এতে জড়িত ছিল। ৮ জুলাই ঢাকার একটি কনভেনশন হলে প্রায় ৪০০ জনকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। প্রশিক্ষণের সময় সেখানে সরকারবিরোধী স্লোগান দেওয়া হয়, যা গোয়েন্দাদের কাছে গভীর উদ্বেগের বিষয়।

১৩ জুলাই রাজধানীর একটি আবাসিক এলাকা থেকে পুলিশের অভিযানে সোহেল রানা ও শামীমা নাসরিন শম্পা নামের দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়। তারা জানিয়েছে, এই পরিকল্পনার মূল লক্ষ্য ছিল ঢাকা দখল। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে দেশজুড়ে তালিকাভুক্ত হাজারো কর্মী একযোগে ঢাকায় প্রবেশ করবে এবং শাহবাগ মোড় দখল করে ব্যাপক আতঙ্ক সৃষ্টি করবে—এমন পরিকল্পনার কথা তারা স্বীকার করেছে।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, তাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী আওয়ামী লীগ অধ্যুষিত জেলাগুলোতেও একযোগে সহিংস পরিস্থিতি তৈরি করা হতো। উদ্দেশ্য ছিল, দেশে রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে শেখ হাসিনাকে ভারত থেকে ফিরিয়ে আনার জন্য আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ চাপ তৈরি করা।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের গুলশান বিভাগের উপকমিশনার কামরুল হাসান বলেন, “এটি একটি বড়সড় পরিকল্পনা এবং তদন্তের স্বার্থে এখনই বিস্তারিত বলা যাচ্ছে না।” তিনি আরও জানান, গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর একাধিক ইউনিট এই তদন্তে কাজ করছে।

ঘটনার পর আওয়ামী লীগ তাদের রাজনৈতিক কৌশলে পরিবর্তন এনেছে বলে জানা গেছে। সরকারও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একটি বিশ্বস্ত দল গোপনে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে যাতে কেউ পালিয়ে যেতে না পারে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ঘটনা দেশের রাজনীতিতে এক নতুন মোড় এনে দিয়েছে। ভবিষ্যতে এর প্রভাব দীর্ঘমেয়াদে টিকে থাকতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

মতামত দিন