রাজনীতি

গত ১৫-১৬ বছরে শ্রমিকদের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে: রিজভী

বরিশাল প্রতিনিধি ॥ বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী বলেছেন, দেশে ১২ কোটি ভোটারের মধ্যে ৭ কোটি ৩৫ লাখ শ্রমিক হলেও তারা সবসময় বঞ্চিত। তাদের অধিকার হরণ করা হয়েছে এবং তারা চরম নির্যাতনের শিকার হয়েছে। গত ১৫-১৬ বছরে ফ্যাসিবাদী শাসনব্যবস্থায় শ্রমিকদের সংগঠিত হওয়ার, ট্রেড ইউনিয়ন গঠনের অধিকার পর্যন্ত কেড়ে নেওয়া হয়েছে।

বরিশাল মহানগর শ্রমিক দলের আয়োজনে সদর রোডের দলীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত এক সমাবেশে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি উপেক্ষিত হয়েছে। অত্যাবশ্যকীয় পরিসেবা বিল ২০২৩-এর মাধ্যমে শ্রমিকদের অধিকারের কণ্ঠরোধ করা হয়েছে। এই আইন মালিকের স্বার্থে হলেও শ্রমিকদের জন্য নয়। এর ফলে জুটমিল, চিনিকল, গার্মেন্টস সহ বিভিন্ন শিল্পখাতে শ্রমিকরা প্রাণ হারাচ্ছে।

তিনি অভিযোগ করেন, শেখ হাসিনার আমলে র‌্যাব-পুলিশ শ্রমিকদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে গুলি চালিয়েছে। এতে মহিলা শ্রমিক আঞ্জুমান আরা খাতুন, জালাল উদ্দিন ও রাসেল নিহত হয়েছেন। ৫ আগস্টের আন্দোলনে শতাধিক শ্রমিক শহীদ হয়েছেন বলে দাবি করেন তিনি। তার মতে, শ্রমিকদের আত্মত্যাগের কথা জাতি ভুলে গেছে।

রিজভী আরও বলেন, গ্যাস-বিদ্যুৎ সংকটে বহু কল-কারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, resulting in massive layoffs. শ্রমিক পরিবারগুলো চরম দারিদ্র্যের মধ্যে রয়েছে। শিশুদের স্কুলে পাঠানো যাচ্ছে না, খাবার জোটানো কষ্টকর হয়ে পড়েছে।

তিনি আইটসোর্সিংয়ের নামে স্থায়ী শ্রমিকদের চাকরি হারানোর প্রসঙ্গ টেনে বলেন, সরকার শ্রমিকবিরোধী নীতি নিয়েছে বলেই আজ এই অবস্থা। জুটমিল ও চিনিকল বন্ধ করে দিয়ে হাজার হাজার শ্রমিককে বেকার করা হচ্ছে।

তিনি সাবেক সরকারের আমলে শ্রমিক পাঠানোর নামে সিন্ডিকেট গঠনের অভিযোগও তোলেন। মালয়েশিয়ায় শ্রমিক পাঠাতে হলে সিন্ডিকেটকে ঘুষ দিতে হতো, তবু চাকরি মিলত না। এখন সেই সিন্ডিকেট না থাকলেও শ্রমিকরা দারিদ্র্যের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে।

সমাবেশে তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনুসের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, জনগণের সমস্যা শুনুন, গণতন্ত্রের জন্য জীবন দেওয়া রাজনৈতিক দলগুলোর কথাও শুনুন। মানবতার করিডোর নিয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে জনগণের মতামত নিতে হবে।

তিনি দাবি করেন, শেখ হাসিনা বর্তমানে আত্মগোপনে রয়েছেন এবং তার বিরুদ্ধে ২২৭টি হত্যাকাণ্ডের দায়ে মামলা হয়েছে। এসব বিষয়ে তদন্ত করে সত্যতা পাওয়া গেছে বলে দাবি করেন তিনি।

সমাবেশ শেষে নগরীর প্রধান সড়কগুলোতে এক বর্ণাঢ্য র‌্যালি অনুষ্ঠিত হয়। এতে মহানগরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মিছিল যোগ দেয়।

মতামত দিন