ভারতীয় ট্রাকে ভরে উঠেছে দিনাজপুরের হিলি বন্দর, ফিরলো কর্মচাঞ্চল্য
হিলি প্রতিনিধি ॥ দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর এখন প্রাণচাঞ্চল্যে ভরপুর। গত কয়েক মাস যেখানে দিন গড়াতো নীরবতায়, সেখানে এখন চারদিকে ট্রাকের ভিড়, লোড-আনলোডের কোলাহল আর ব্যবসায়ীদের আনাগোনা। আমদানি-রপ্তানির এই জোয়ার স্থানীয় শ্রমিকদের মুখে আবারও হাসি ফিরিয়েছে।হিলি কাস্টমস তথ্য অনুযায়ী, আগস্টের প্রথম ১১ দিনে মাত্র ২২৯ ট্রাকে ৬ হাজার ২৪৮ মেট্রিকটন পণ্য এসেছে। কিন্তু ১২ আগস্ট থেকে ২৭ আগস্ট পর্যন্ত অর্থাৎ মাত্র ১৫ দিনে এই সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১৩১৩ ট্রাক ও ৪৮ হাজার ৫৩৭ মেট্রিকটন। এছাড়া গত দুই মাসে ভারতে রপ্তানি হয়েছে ২ হাজার ৯১ মেট্রিকটন পণ্য, যা থেকে ১৮ কোটি টাকা রাজস্ব আয় হয়েছে।
এক সময় দিনে ১০ থেকে ১৫টি ভারতীয় ট্রাক প্রবেশ করতো বন্দরে। এখন সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রতিদিন ১৩০ থেকে ১৫০টিতে। ফলে বন্দরের ভেতরে এবং বাইরে ভিড় বেড়েছে ব্যবসায়ী, চালক, হেলপার ও শ্রমিকদের।
বন্দরে কাজ করা শ্রমিকরা জানান, দীর্ঘদিন তাদের আয় ছিল না। সংসার চালানো কষ্টকর হয়ে পড়েছিল। কিন্তু এখন লোড-আনলোডের ব্যস্ততায় তারা আবারও উপার্জনের সুযোগ পেয়েছেন। "বন্দরে এখন প্রচুর কাজ হচ্ছে। আমরা কাজ পাচ্ছি, সংসারও ভালোভাবে চলছে,"—বললেন এক শ্রমিক।
আমদানিকারক নুর-ইসলাম বলেন, "দেশে চালের দাম বৃদ্ধির কারণে ভারত থেকে চাল আমদানি করছি। এতে আমরা ব্যবসায়ীরা যেমন সুবিধা পাচ্ছি, তেমনি দেশের বাজারেও প্রভাব পড়ছে।"
আমদানি-রপ্তানি কারক গ্রুপের সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন শিল্পী জানান, বন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি বৃদ্ধির কারণে স্থানীয় অর্থনীতি চাঙা হয়েছে। শ্রমিক থেকে শুরু করে পরিবহন ব্যবসা, দোকানপাট—সবখানে গতি ফিরেছে।
কাস্টমস রাজস্ব কর্মকর্তা নিজাম উদ্দীন বলেন, "আমরা নিত্যপ্রয়োজনীয় ও কাঁচামাল পণ্য দ্রুত ছাড়করণে অগ্রাধিকার দিচ্ছি। ফলে ব্যবসায়ী ও আমদানিকারকরা কোনো ভোগান্তিতে পড়ছেন না।"
হিলি বন্দরের এই কর্মচাঞ্চল্য শুধু সীমান্ত এলাকায় নয়, দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষকেও স্বস্তি দিয়েছে। নীরবতা ভেঙে এখন হিলি বন্দর ব্যস্ততম স্থলবন্দরে পরিণত হয়েছে।
মতামত দিন