জেলার খবর

হিলি স্থলবন্দর: চুক্তি ভঙ্গ করে নিজেই আমদানিকারক পোর্ট কর্তৃপক্ষ!

হিলি প্রতিনিধি ॥ দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর, যা দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম স্থলবন্দর হিসেবে পরিচিত, সেখানে আমদানি কার্যক্রমে আশঙ্কাজনক হারে ধস নেমেছে। একসময় প্রতিদিন যেখানে ৩০০-৪০০ ট্রাক ভারত থেকে পণ্য নিয়ে বন্দরে প্রবেশ করতো, বর্তমানে সেই সংখ্যা নেমে এসেছে ১৭-২০-এর ঘরে। বিষয়টি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাহিলি সিঅ্যান্ডএফ (ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়ার্ডিং) এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশন।

সোমবার (১২ মে) দুপুরে অ্যাসোসিয়েশনের নিজস্ব কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সভাপতি মোঃ ফেরদৌস রহমান বলেন, “বন্দরের পরিচালনায় বে-সরকারি অপারেটর হিলি পানামা পোর্ট লিংক লিমিটেডের স্বেচ্ছাচারিতা ও শুল্ক স্টেশনের অনিয়মের ফলে আমদানি কার্যক্রম প্রায় অচল হয়ে পড়েছে।” তিনি অভিযোগ করেন, একেক সময় একেক রকম এইচএস কোড ব্যবহারের ফলে ব্যবসায়ীদের পণ্যের শ্রেণিকরণ ও কর নির্ধারণে জটিলতা তৈরি হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, বন্দরের ভেতরে দুটি পণ্য মাপার স্কেল নষ্ট থাকায় পণ্যের ওজন নির্ধারণ নিয়ে বিভ্রান্তি দেখা দিচ্ছে। পাশাপাশি পোর্টের চেয়ারম্যান নিজেই চুক্তি ভঙ্গ করে আমদানিকারক হিসেবে পাথর আমদানি করেছেন বলেও অভিযোগ তোলেন তিনি।

সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মোঃ শাহিনুর ইসলাম শাহিন জানান, শেডের অভাবে মূল্যবান পণ্য খোলা আকাশের নিচে পড়ে থাকে। এছাড়া শ্রমিকদের উপযুক্ত মজুরি না দেওয়ার কারণে পণ্য লোড-আনলোডে দেরি হচ্ছে এবং ব্যবসায়ীদের অতিরিক্ত “নাইট চার্জ” গুনতে হচ্ছে। অভিযোগ উঠেছে, বন্দরের শ্রমিক সেকশনটি বে-নামে সরকারের কাছ থেকে ৭৬ লাখ ৫০ হাজার টাকায় নেওয়া হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত সিএনএফ নেতারা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ জানানো হলেও নৌ মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি। বন্দরের এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে হিলি স্থলবন্দর তার গুরুত্ব হারাবে এবং ব্যবসায়ীরা মুখ ফিরিয়ে নেবে।

স্থানীয় শ্রমিকরাও মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেন না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শ্রমিক নেতা বলেন, "ন্যায্য মজুরি পাচ্ছি না, কিন্তু কিছু বললে নিরাপত্তার গ্যারান্টি নেই।"

হিলি স্থলবন্দরের সংকট নিরসনে দ্রুত নীতিনির্ধারণী হস্তক্ষেপ না হলে এটি দেশের অর্থনীতিতেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা।

মতামত দিন