যৌথ বাহিনীর শ্বাসরুদ্ধকর অভিযানে শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন গ্রেপ্তার
ডেস্ক রিপোর্ট ॥ কুষ্টিয়ার কালীশংকরপুর এলাকায় যৌথ বাহিনীর শ্বাসরুদ্ধকর অভিযানে গ্রেপ্তার করা হয়েছে দেশের শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইনকে। মঙ্গলবার ভোর ৫টা থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত টানা তিন ঘণ্টার এই অভিযান পরিচালিত হয় সোনার বাংলা মসজিদের পাশে একটি বাড়িতে। অভিযানে সুব্রত বাইন ছাড়াও আরও সাতজনকে আটক করা হয়, যাদের মধ্যে রয়েছেন আরেক কুখ্যাত সন্ত্রাসী মোল্লা মাসুদ।সরকারের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এই অভিযান পরিচালনা করা হয়। সুব্রত বাইন দীর্ঘদিন ধরে আত্মগোপনে ছিলেন। ধারণা করা হচ্ছে, তিনি বিভিন্ন সময়ে দেশের বাইরে থেকেও তার অপরাধচক্রের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছেন। তার গ্রেপ্তার দেশে আলোচিত অপরাধ জগতের এক গুরুত্বপূর্ণ পর্বের অবসান ঘটাতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
নব্বইয়ের দশকে ঢাকার অপরাধ জগতে সুব্রত বাইন ছিলেন এক আতঙ্কের নাম। দরপত্র নিয়ন্ত্রণ, চাঁদাবাজি, আধিপত্য বিস্তার এবং একাধিক খুন-জখমের ঘটনায় তিনি জড়িত ছিলেন। তার উত্থান ঘটে মগবাজারের বিশাল সেন্টার ঘিরে। শুরুতে চাংপাই নামক একটি রেস্টুরেন্টে কাজ করলেও ধীরে ধীরে অপরাধ জগতে প্রবেশ করেন তিনি। বিশাল সেন্টারই পরবর্তীতে তার অপরাধের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয় এবং এলাকাবাসীর মুখে তিনি পরিচিত হন ‘বিশালের সুব্রত’ নামে।
সুব্রতের বিরুদ্ধে বহু আগে থেকেই একাধিক গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি ছিল। তবে বিভিন্ন সময় তিনি নাম-পরিচয় পাল্টে আত্মগোপনে ছিলেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। মোল্লা মাসুদও একসময় রাজধানীর অপরাধজগতে সক্রিয় ছিলেন এবং তার বিরুদ্ধেও রয়েছে নানা অপরাধমূলক কার্যকলাপের অভিযোগ।
এই গ্রেপ্তার অভিযান কুষ্টিয়ায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, দীর্ঘদিন পর এমন বড় আকারের অভিযান এলাকায় দেখা গেল। আলোচিত এই দুই সন্ত্রাসীর গ্রেপ্তারে তারা স্বস্তি প্রকাশ করেছেন।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা বলছেন, এই অভিযান ছিল অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ, কিন্তু সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। সুব্রত বাইন ও মোল্লা মাসুদের পুনরায় সক্রিয় হওয়ার তথ্য আগেই থাকায় নজরদারি বাড়ানো হয়েছিল। ফলে সময়মতো অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা সম্ভব হয়েছে।
মতামত দিন