মৌলভীবাজারে এরাবিকা ও রোবাস্টা কফি চাষে কৃষকদের সাফল্য
মৌলভীবাজার প্রতিনিধি ॥ মৌলভীবাজারে চায়ের সাথে কফি চাষের সম্ভাবনা নতুন উদ্দীপনা দেখাচ্ছে। ব্রিটিশ শাসনের সময় মৌলভীবাজারে কফি চাষ হলেও পরে এটি হ্রাস পায়। বর্তমানে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্যোগে কফি চাষ পুনরায় শুরু হয়েছে। বিভিন্ন উপজেলায় চারা বিতরণ ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে স্থানীয় কৃষকরা কফি চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।মৌলভীবাজার সদর, শ্রীমঙ্গল, রাজনগর ও পাহাড়ি এলাকা বাণিজ্যিকভাবে এরাবিকা ও রোবাস্টা জাতের কফি চাষে সফলতা পেয়েছে। কৃষক আব্দুল মান্নান তাঁর ১,৮০০ কফি গাছের বাগান থেকে ইতিমধ্যে কয়েক দফা ফলন সংগ্রহ করে লক্ষাধিক টাকার বিক্রি করেছেন। শ্রীমঙ্গলের তরুণ উদ্যোক্তা মোঃ আতর আলীর বাগানেও ৩০০ কফি গাছ থেকে তিনবার ফলন হয়েছে।
রাজনগরের চা বাগানগুলোতেও নতুন কফি বাগান গড়ে তোলা হয়েছে। সিনিয়র ম্যানেজার মোঃ লোকমান চৌধুরী জানান, ৩,০০০ চারা রোপণ করে নতুন বাণিজ্যিক কফি বাগান স্থাপন করা হয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও গবেষণা ইনস্টিটিউট মাঠ পর্যায়ে প্রশিক্ষণ, মানসম্মত চারা এবং সহায়তা প্রদান করছে।
কফির মধ্যে পুষ্টি উপাদান, খনিজ ও ভিটামিন সমৃদ্ধ, যা চা-বাগানের সাথে কফি চাষকে লাভজনক ও স্বাস্থ্যসম্মত বিকল্প বানাচ্ছে। মৌলভীবাজার জেলার পাহাড়ি ও টিলা সমৃদ্ধ ভূমি কফি চাষের জন্য অনুকূল। কৃষকরা বাণিজ্যিকভাবে সফল হওয়ায় এই অঞ্চলে কফি চাষে আগ্রহ ক্রমবর্ধমান।
স্থানীয় পর্যটন ও অর্থনীতিতেও কফি চাষ নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে পারে। পরিকল্পিত চাষ, প্রক্রিয়াজাতকরণ ও সরকারি সহায়তায় মৌলভীবাজার আগামী কয়েক বছরে দেশের শীর্ষ কফি উৎপাদনকারী অঞ্চলে পরিণত হতে পারে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে কৃষকের আয়ের উৎস বৃদ্ধি পাবে এবং চা-বাগানের সঙ্গে কফি চাষ একটি লাভজনক বিকল্প হয়ে উঠবে।
কফি চাষ সম্প্রসারণে স্থানীয় কৃষকরা ইতিমধ্যেই সফল হয়েছেন। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কফি চাষ এলাকায় অর্থনৈতিক ও সামাজিক সম্ভাবনার নতুন মাত্রা যোগ করছে। মৌলভীবাজারে কফি চাষের ধারাবাহিকতা নিশ্চিত হলে এটি দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক বাজারে গুরুত্বপূর্ণ কৃষিপণ্য হিসেবে পরিচিতি পাবে।
মতামত দিন