জেলার খবর

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে রেজিস্ট্রারের কুশপুত্তলিকা দাহ

বরিশাল প্রতিনিধি ॥ বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ববি) রেজিস্ট্রার মো. মনিরুল ইসলামের অপসারণসহ চার দফা দাবিতে আন্দোলন করছে একদল শিক্ষার্থী। আজ রবিবার (২৭ এপ্রিল) দুপুরে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে তালা লাগিয়ে রেজিস্ট্রারের কুশপুত্তলিকা দাহ করেছেন। তবে, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রশাসনিক ভবনে উপস্থিত ছিলেন না। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা স্পষ্ট জানিয়েছেন যে, প্রশাসন যদি তাদের দাবির ব্যাপারে কোনো অগ্রগতি না দেখায়, তাহলে আন্দোলনের মাত্রা আরও বাড়ানো হবে।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মুখপাত্র রাকিন খান বলেছেন, "রেজিস্ট্রার মনিরুল ইসলামকে দাপ্তরিকভাবে অপসারণ না করা পর্যন্ত আমরা এই তালা খুলবো না এবং খুলতেও দেবো না।" তিনি আরও বলেন, মনিরুল ইসলাম ভোলা জেলার মনপুরা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি। তিনি জানান, গত জুলাই মাসে আন্দোলনের সময় মনিরুল ইসলাম ছাত্রদের ন্যায্য দাবির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিলেন এবং চুক্তিভিত্তিক নিয়োগে থাকা সত্ত্বেও দীর্ঘদিন ধরে প্রশাসনে প্রভাব বিস্তার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুশাসনের পরিপন্থী কাজ করেছেন।

ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী তরিকুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, "ফ্যাসিবাদের দোসররা অধ্যাপক ড. মুহসিন উদ্দিন স্যারকে নিয়ে অপমানজনক মন্তব্য করেছে এবং তাকে সিন্ডিকেট ও একাডেমিক কাউন্সিল থেকে বাদ দিয়েছে।" তিনি আরও জানান, "আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাদের কোনো গুরুত্ব দিচ্ছে না।"

কোস্টাল স্টাডিজ অ্যান্ড ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থী স্বপ্নিল অপূর্ব রকি বলেন, "রেজিস্ট্রার মনিরুল ইসলাম নারী কেলেঙ্কারিতে জড়িত ছিলেন, তারপরেও তাকে প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ পদে রাখা হয়েছে, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য লজ্জাজনক।" তিনি রেজিস্ট্রার মনিরুল ইসলামকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছেন।

এর আগে, গত ২৪ এপ্রিল শিক্ষার্থীরা রেজিস্ট্রারের অপসারণসহ চার দফা দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে দুই দিনের আল্টিমেটাম দিয়েছিল। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কোনো সাড়া না পাওয়ায় তারা এ কর্মসূচি পালন করেন। শিক্ষার্থীদের চার দফা দাবি হলো:
১. অধ্যাপক ড. মুহসিন উদ্দিনের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ প্রত্যাহার করে তাকে একাডেমিক কাউন্সিল ও সিন্ডিকেট সদস্য হিসেবে পুনর্বহাল করা।
২. চুক্তিভিত্তিক নিয়োগপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মো. মনিরুল ইসলামকে অবিলম্বে অপসারণ করা।
৩. বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন লাভজনক কমিটিতে থাকা স্বৈরাচার ও ফ্যাসিবাদের সহযোগী শিক্ষকদের অপসারণ করা।
৪. বিতর্কিত শিক্ষকদের পুনর্বাসনের ঘটনায় উপাচার্যকে প্রকাশ্যে দুঃখপ্রকাশ ও ক্ষমা চাওয়া।

মতামত দিন