জেলার খবর

বরিশালে স্বাস্থ্য আন্দোলনের নামে সহিংসতা, জরুরি বিভাগ বন্ধের হুঁশিয়ারি

বরিশাল প্রতিনিধি ॥ স্বাস্থ্য সংস্কার আন্দোলনের নামে হামলার ঘটনায় উত্তেজনা বিরাজ করছে বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে। চিকিৎসক, নার্স, কর্মকর্তা, স্টাফ এবং মেডিকেল কলেজ শিক্ষার্থীরা একযোগে দাবি তুলেছেন, আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে হামলাকারীদের গ্রেফতার করতে হবে। অন্যথায় জরুরি বিভাগসহ সব চিকিৎসা কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হবে।

সোমবার দুপুরে হাসপাতালের সামনে মানববন্ধনে চিকিৎসক, নার্স ও স্টাফরা অংশ নেন। মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, স্বাস্থ্য সংস্কার আন্দোলন যৌক্তিক হলেও তা এখন সহিংসতায় পরিণত হয়েছে। আন্দোলনের নামে চিকিৎসক ও স্টাফদের প্রতিপক্ষ মনে করে হামলা চালানো হচ্ছে। শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) এর বরিশাল জেলা সাধারণ সম্পাদক ডা. আবদুল মোনায়েম সাদ বলেন, “প্রতিদিনই আমাদের উপর হামলা হচ্ছে। আমরা নিরাপত্তাহীনতায় আছি। তাই আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে হামলাকারীদের গ্রেফতার করতে হবে।”

শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, তারা ইতোমধ্যে অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস বর্জন করেছেন। জুবায়ের আল মাহমুদ বলেন, “যতদিন পর্যন্ত মহিউদ্দিন রনি ও কন্টেন্ট ক্রিয়েটর কাফিসহ উসকানিদাতাদের গ্রেফতার না করা হবে, ততদিন ক্লাসে ফিরব না।”

ইন্টার্ন চিকিৎসক ডা. নাজমুল হুদা সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “রোববার থেকে জীবনের ঝুঁকি নিয়েই আমরা জরুরি বিভাগ চালু রেখেছি। কিন্তু হামলাকারীরা অব্যাহত হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। তাই আগামীকাল ১৯ আগস্ট দুপুর ১২টার মধ্যে দোষীদের গ্রেফতার করতে হবে। অন্যথায় হাসপাতালের সব কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।”

এদিকে মিড লেভেল ডাক্তারস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. শাখাওয়াত হোসেন সৈকত অভিযোগ করেন, “১৭ আগস্ট হাসপাতালের প্রবেশ পথে দুষ্কৃতকারীরা অবস্থান নেয়। ওই সময় আমাদের সহকর্মী ডা. দিলীপ রায়কে বেদম মারধর করা হয়। রোগীরাও আতঙ্কে ছিলেন। চিকিৎসকদের জন্য এমন নিরাপত্তাহীনতা গ্রহণযোগ্য নয়।”

শেবাচিম হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. এ কে এম মশিউল মুনীর জানান, “আমি ছাত্র-চিকিৎসকদের শান্ত থাকার পরামর্শ দিয়েছি। রোগীদের যেন কোনোভাবেই ক্ষতি না হয় সে দিকেও দৃষ্টি রাখতে অনুরোধ করেছি।”

চিকিৎসক ও শিক্ষার্থীরা হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, “এবার আর আপস নয়। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে হামলাকারীদের গ্রেফতার না করা হলে সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করা হবে।”

মতামত দিন