জেলার খবর

বরিশালে স্বাস্থ্যখাত সংস্কার দাবিতে আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতার ওপর হামলা

বরিশাল প্রতিনিধি ॥ বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্বাস্থ্যখাত সংস্কারের দাবিতে ১৮ দিন ধরে চলমান আন্দোলন নতুন রূপ নিয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) হাসপাতালের প্রধান ফটকে আন্দোলনরত ছাত্র-জনতার ওপর হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক, নার্স, টেকনিশিয়ান এবং তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারীরা হামলা চালিয়ে কমপক্ষে ১৫ জনকে আহত করেছে।

হাসপাতালের স্টাফদের এই হামলার ঘটনায় উত্তপ্ত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। আন্দোলনকারীরা মানববন্ধন ও অনশন পালন করছিলেন। অভিযোগ অনুযায়ী, হাসপাতালে কর্মরত স্টাফরা অযৌক্তিক দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করে আন্দোলনকারীদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি ব্যাহত করেছে। হামলার সময় আন্দোলনকারীরা দৌঁড়ে পালানোর চেষ্টা করলে আহত হন।

অন্দোলনের নেতৃত্বে থাকা মহিউদ্দিন রনি জানান, দেশের সরকারি হাসপাতালগুলোতে স্বাস্থ্যখাত সংস্কারের দাবি বাস্তবায়নের জন্য তারা ১৮ দিন ধরে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছেন। ১৩ আগস্ট বরিশালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের দেওয়া বক্তব্যে ক্ষুব্ধ হয়ে আন্দোলনকারীরা ১৪ আগস্ট বরিশালে নতুন কর্মসূচি হাতে নিয়েছিলেন। রনি অভিযোগ করেন, মহাপরিচালক বরিশালে এসে আন্দোলনকারীদের কোনো প্রতিনিধি না রেখে উস্কানিমূলক বক্তব্য দেন। এ কারণে হাসপাতালের স্টাফরা পরিকল্পিতভাবে হামলা চালিয়েছে।

অভিযোগ অনুযায়ী, হাসপাতালের স্টাফরা আন্দোলনকারীদের কটুক্তি এবং ‘দালাল’ আখ্যা দেয়ায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় আন্দোলনকারীরাও আহত হয়েছেন। আন্দোলনকারীরা বলেন, এই হামলা শুধু তাদের দমন করার উদ্দেশ্যে চালানো হয়েছে। তাঁরা স্বাস্থ্য উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি করে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করবেন।

মহিউদ্দিন রনি বলেন, দেশের সব সরকারি হাসপাতালের অব্যবস্থাপনা, চিকিৎসা সেবায় অবহেলা এবং স্বাস্থ্যখাত সংস্কারের দাবির জন্য আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। শিক্ষার্থীরা আশা করছিলেন, স্বাস্থ্য উপদেষ্টা সরাসরি বরিশালে এসে তাঁদের যৌক্তিক দাবি শুনবেন। কিন্তু তা না হওয়ায় আন্দোলনকারীরা মহাপরিচালকের কাছে তাদের দাবি উপস্থাপন করতে পারেননি।

বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের একাধিক স্টাফ নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, মানববন্ধন চলাকালীন ছাত্ররা আমাদের কটুক্তি ও অযৌক্তিক দাবিতে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় আহত হয়েছেন। তবে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বলেন, হামলার পরিকল্পনা আগে থেকে করা হয়েছে এবং এটি যৌক্তিক দাবির প্রতিবাদে পরিচালিত।

উত্তপ্ত পরিস্থিতি হাসপাতাল কম্পাউন্ডে অব্যাহত আছে। প্রশাসন ও আন্দোলনকারীরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করলেও দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় উত্তেজনা অব্যাহত রয়েছে।

মতামত দিন