পাহাড়ি ঢলে প্লাবিত হাওর-বাঁওড়, তবু নেই প্রস্তুতি !
মৌলভীবাজার প্রতিনিধি ॥ গত বছরের মতো এবারও মৌলভীবাজার জেলার বিভিন্ন এলাকায় বন্যা ও নদীভাঙনের ভয়াবহ পরিস্থিতির আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে মনু, ধলাই, কুশিয়ারা, ফানাই ও সোনাই নদীর পানি ক্রমাগত বেড়ে চলায় জেলার কুলাউড়া, রাজনগর, জুড়ী ও কমলগঞ্জ উপজেলার কয়েক লাখ মানুষ আতঙ্কে রয়েছেন। এদিকে প্রতিরক্ষা বাঁধগুলোর দুর্বলতা এবং অসমাপ্ত প্রকল্পগুলোর কাজ নিয়ে স্থানীয়রা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।২০২১ সালে নদীভাঙন রোধে যে প্রকল্প গ্রহণ করা হয়, তার আওতায় কুলাউড়া উপজেলার শরীফপুর, হাজীপুর, পৃথিমপাশা ও টিলাগাঁও ইউনিয়নে ৩০৭ কোটি টাকার ২৮টি প্যাকেজের কাজ চলছে। তবে প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি এখন পর্যন্ত মাত্র ৫০ শতাংশ। পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, ২০টি প্যাকেজে স্থায়ী তীর প্রতিরক্ষা, ৪টি চর অপসারণ এবং ৪টি বাঁধ পুনরাকৃতীকরণের কাজ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
প্রকল্পের কাজ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শেষ না হওয়ায় স্থানীয়রা শঙ্কিত। তারা জানান, গত বছর বর্ষায় একাধিক স্থানে বাঁধ ভেঙে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছিল। বিশেষ করে টিলাগাঁও ইউনিয়নের গুদামঘাট, হাজীপুরের মিয়ারপাড়া ও পৃথিমপাশার শিকড়িয়া ডেমা বিলে বড় ধরনের ভাঙনের ঘটনা ঘটে। এসব এলাকায় পানির তোড়ে ঘরবাড়ি, ফসল, রাস্তা এবং ফিসারিগুলো তলিয়ে যায়।
স্থানীয়দের অভিযোগ, এ বছরও ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধগুলোতে মাটি ভরাট ছাড়া কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তারা আশঙ্কা করছেন, যদি পাহাড়ি ঢলের পানি হঠাৎ বেড়ে যায়, তবে এই বাঁধগুলো চাপ সহ্য করতে পারবে না। সীমান্তবর্তী কয়েকটি স্থানে বিএসএফের বাধার কারণে কাজ বন্ধ রয়েছে বলেও জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী খালেদ বিন অলিদ বলেন, “কিছু এলাকায় স্থানীয়দের বিরোধিতার কারণে কাজ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে, তবে আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আমাদের টিম ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধগুলোর ওপর নজর রাখছে এবং প্রাথমিক প্রস্তুতি গ্রহণ করছে।”
এদিকে এলাকার মানুষ দাউদপুর, গাজীপুর, মন্দিরা, কাউকাপন, রাজাপুরসহ বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বন্যা ও ভাঙনের আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। তাদের একটাই দাবি, প্রকল্পের কাজ দ্রুত সম্পন্ন করে স্থায়ী নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হোক।
মতামত দিন