জেলার খবর

নিয়োগে নেই নথিপত্র, দুদকের প্রশ্নে নীরব অধ্যক্ষ

মাদারীপুর প্রতিনিধি ॥ মাদারীপুরের ডাসার উপজেলায় শিক্ষক নিয়োগে অনিয়ম ও অধ্যক্ষদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগের ভিত্তিতে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) দুইটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালিয়েছে। বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) দুপুরে এই অভিযান পরিচালনা করেন জেলা দুদক কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আখতারুজ্জামান ও উপ-সহকারী পরিচালক মো. সাইদুর রহমান অপুসহ চার সদস্যের একটি দল।

অভিযান চালানো হয় ডাসার সরকারি মহিলা মহাবিদ্যালয় (পূর্ব নাম: সরকারি শেখ হাসিনা উইমেন্স কলেজ) এবং শশীকর শহীদ স্মৃতি মহাবিদ্যালয়ে। তদন্ত সূত্রে জানা যায়, ২০১৩ সালের ১৮ নভেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয় "শেখ হাসিনা একাডেমি অ্যান্ড উইমেন্স কলেজ" জাতীয়করণ সংক্রান্ত একটি পরিপত্র জারি করে। সেই পরিপত্রে কলেজের শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ ও স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি হস্তান্তরে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। এর পরেও তৎকালীন অধ্যক্ষ ও কলেজ পরিচালনা কমিটির কিছু সদস্য ছয়জন শিক্ষক-কর্মচারীকে নিয়োগ দেন, যার মধ্যে রয়েছেন সৈয়দ অলিউর রহমান, সুদীপ বষু, রেবেকা পারভান এ্যানী, নুরুন নাহার, হুমায়ুন কবির ও মো. মামুন।

স্থানীয় সাংবাদিকরা এই বিষয়ে সংবাদ প্রকাশ করলে বিষয়টি দুদকের নজরে আসে এবং তদন্তের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। দুদকের কর্মকর্তারা জানান, অভিযানে গিয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষ কোনো বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারেনি। তারা আগামী রবিবার পর্যন্ত সময় চেয়েছে। দুদক কর্মকর্তারা নিয়োগ সংক্রান্ত তথ্য ও নথিপত্র সংগ্রহ করেছেন এবং প্রাথমিকভাবে অনিয়মের প্রমাণ পেয়েছেন।

এছাড়াও, শশীকর শহীদ স্মৃতি মহাবিদ্যালয়ে বিভিন্ন দুর্নীতির তথ্য পাওয়া গেছে। তদন্তে উঠে এসেছে, কলেজের অধ্যক্ষের স্ত্রী ভারতে বসবাস করলেও বাংলাদেশ সরকার থেকে নিয়মিত বেতন নিচ্ছেন। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে এবং বিধিবহির্ভূত হলে দুদক আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।

ডাসার সরকারি মহিলা কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জাকিয়া সুলতানা দাবি করেন, উপর মহলের মৌখিক নির্দেশেই নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। অপরদিকে শশীকর কলেজের অধ্যক্ষ দূর্লভানন্দ বাড়ৈ জানান, তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ বিষয়ে তিনি উচ্চ আদালতে রিট করেছেন।

দুদক জানিয়েছে, অভিযানের ফলাফল বিশ্লেষণ করে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। তদন্তে অনিয়ম ও দুর্নীতি প্রমাণিত হলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মতামত দিন