জেলার খবর

নারী-শিশুসহ ৪৪ জনকে বাংলাদেশে ঠেলে দিল বিএসএফ

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি ॥ মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার উত্তর শাহবাজপুর সীমান্ত দিয়ে বুধবার ভোরে নারী ও শিশুসহ ৪৪ জন বাংলাদেশিকে পুশইন করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। পুশইনকৃতদের মধ্যে ১৩ জন পুরুষ, ১৮ জন নারী ও ১৩ শিশু রয়েছে। সীমান্তে নজরদারি চালিয়ে বিজিবি (বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ) তাদের আটক করে।

বিজিবি সূত্র জানায়, আটককৃতদের বেশিরভাগের বাড়ি কুড়িগ্রাম জেলায়। এছাড়া যশোর ও বাগেরহাট জেলার বাসিন্দাও রয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানিয়েছেন, জীবিকার সন্ধানে তারা ভারতে গিয়েছিলেন। সেখানকার পুলিশের অভিযানে তারা আটক হন এবং এরপর কোনও কাগজপত্র বা মালামাল ছাড়াই সীমান্ত পথে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠানো হয়।

৫২-বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মেহেদী হাসান জানান, “এই ৪৪ জনকে ভারতীয় বিএসএফ সীমান্তে এনে বাংলাদেশের ভেতরে ঢুকিয়ে দেয়। আমরা স্থানীয়দের মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পেরে অভিযান চালিয়ে সবাইকে আটক করি। তাদের প্রাথমিকভাবে উত্তর শাহবাজপুর বালিকা বিদ্যালয়ে রাখা হয়।”

তিনি আরও জানান, আটককৃতরা বাংলাদেশের নাগরিক বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে এবং যাচাই-বাছাই শেষে বড়লেখা থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। পরবর্তীতে তাদের পরিবারের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান রফিক উদ্দিন আহমদ জানান, “বিএসএফের এমন কার্যক্রম অত্যন্ত দুঃখজনক। তারা নিয়মিতভাবে এভাবে পুশইন করছে যা মানবাধিকারের লঙ্ঘন।”

উল্লেখ্য, এর আগে ৬ ও ৭ মে তারিখেও বিএসএফ শতাধিক বাংলাদেশিকে সীমান্তে ঠেলে দিয়েছিল। তখন ৫৯ জনকে আটক করে যাচাই শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। বিজিবি সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার করলেও পুনরায় পুশইনের ঘটনা ঘটায় প্রশ্ন উঠছে নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা নিয়ে।

এদিকে আটককৃতরা আরও জানান, সীমান্তের ওপারে এখনো আরও অনেক বাংলাদেশি আটকে রয়েছে, যাদের ভারত থেকে পুশইনের প্রক্রিয়া চলছে। বিষয়টি এখন কেবল সীমান্ত নিরাপত্তার নয়, বরং একটি বৃহৎ মানবিক সংকট হিসেবেই দেখা দিচ্ছে।

মতামত দিন