ঠাকুরগাঁওয়ে কবরস্থানেও অনিয়ম-দূর্নীতি, হাত দিলেই খসে পড়ে ঢালাই !
ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি ॥ ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার কাজীপাড়া কবরস্থানে সীমানা প্রাচীর নির্মাণে ভয়াবহ অনিয়ম ধরা পড়েছে। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে পড়েছে ভিডিওটি।ভিডিওতে দেখা যায়, ঢালাই করা গ্রেডবিমের পলেস্তারা হাত দিলেই খসে পড়ছে। বিষয়টি স্থানীয়দের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে ক্ষুব্ধ জনতা প্রতিবাদ জানিয়ে ভেঙে ফেলেন নিম্নমানের কাঠামো। শুক্রবার (২২ আগস্ট) এ ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে নেটিজেনরা ক্ষোভ প্রকাশ করে কঠোর শাস্তির দাবি জানান।
রবিবার (২৪ আগস্ট) সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শ্রমিকরা নির্মিত বিম ভাঙছেন, আর পাশে দাঁড়িয়ে আছেন উপসহকারী প্রকৌশলী প্রমোদ চন্দ্র রায় ও সার্ভেয়ার মোস্তাফিজুর রহমান। এসময় স্থানীয়রা তাদের উদ্দেশে ক্ষোভ প্রকাশ করলে কাজ বন্ধ হয়ে যায়।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ৩ লাখ টাকা ব্যয়ে হওয়া এ প্রকল্পে ইচ্ছাকৃতভাবে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে। “মানুষ মারা গেলে যে কবরস্থানে শুয়ে থাকবে, সেই স্থানে অনিয়ম লজ্জাজনক”—বলেন স্থানীয় সাইদুর রহমান। তিনি আরও দাবি করেন, ঠিকাদারের লাইসেন্স বাতিল এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের চাকরিচ্যুত করতে হবে।
অভিযোগ উঠেছে, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আল আকসা এবং এলজিইডি কর্মকর্তাদের যোগসাজশেই এই অনিয়ম হয়েছে। স্থানীয়রা প্রশ্ন তুলেছেন—“কবরস্থানেও যদি চুরি হয়, তাহলে সমাজের অবস্থা কী?”
এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির প্রতিনিধি পশিরুল ইসলাম জানান, “আগের ঢালাই ভেঙে নতুন করে নির্মাণ করা হবে।”
উপসহকারী প্রকৌশলী প্রমোদ চন্দ্র রায় বলেন, “তদারকির অভাবে অনিয়ম হয়েছে। ঢালাইয়ে সিমেন্ট কম, বালু বেশি ব্যবহার করা হয়েছিল। ঠিকাদার না জানিয়ে কাজ করেছে।”
উপজেলা প্রকৌশলী মো. মাবুদ হোসেনও স্বীকার করেন, “ঠিকাদার নিয়ম ভঙ্গ করেছে। ঢালাই করার দুই সপ্তাহ পর স্যাটারিং খোলার নিয়ম থাকলেও একদিন পরই খুলে ফেলা হয়েছে।”
এর আগেও এলজিইডি ও কিছু ঠিকাদারদের বিরুদ্ধে রাস্তা ও ব্রিজ নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছিল। তবে এবার কবরস্থানের মতো পবিত্র স্থানে দুর্নীতি ধরা পড়ায় এলাকাজুড়ে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে।
মতামত দিন