জেলার খবর

জুলাই অভ্যুত্থানের চেতনায়ও আজ প্রশ্নবিদ্ধ বিচার: রিজভী

পটুয়াখালী প্রতিনিধি ॥ পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলার পাংগাশিয়া ইউনিয়নের শহীদ জসিম উদ্দিন হাওলাদারের কন্যা লামিয়া ধর্ষণ ও পরবর্তীতে মৃত্যুর ঘটনায় দেশজুড়ে শুরু হয়েছে তীব্র প্রতিক্রিয়া ও শোক। গত শনিবার (২৬ এপ্রিল) ঢাকার মোহাম্মদপুরের শেখেরটেক এলাকার একটি ভাড়া বাসা থেকে লামিয়ার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তাকে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

শহীদ কন্যা লামিয়ার মৃত্যুর খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে তার গ্রামের বাড়ি পাংগাশিয়ায় নেমে আসে শোকের ছায়া। রবিবার (২৭ এপ্রিল) সকাল সাড়ে সাতটায় লাশবাহী গাড়িটি পৌঁছালে স্থানীয় পাংগাশিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে জানাজা অনুষ্ঠিত হয় এবং পরে বাবার কবরের পাশে তাকে দাফন করা হয়।

প্রসঙ্গত, গত ১৮ মার্চ লামিয়া তার দাদা বাড়ি থেকে নানা বাড়ি যাওয়ার পথে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন। পরদিন তিনি নিজেই দুমকি থানায় মামলা দায়ের করেন। পুলিশ অভিযুক্ত সাকিব ও সিফাতকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠায় এবং তারা ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। মামলাটি বর্তমানে তদন্তাধীন।

এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপি এবং জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন নিহত লামিয়ার পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে। 'আমরা বিএনপি পরিবার' সংগঠনের প্রধান উপদেষ্টা ও বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, “বিচার নিশ্চিত হলে লামিয়াকে মরতে হতো না। জাতির কাছে এটি একটি বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে।”

জাতীয় নাগরিক পার্টির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেন, “এই ঘটনায় দেশবাসীর শিক্ষা নেয়া উচিত। আমরা আগামী ৯০ দিনের মধ্যে খুনিদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের দাবি জানাচ্ছি।”

এদিকে, পটুয়াখালী জেলা পুলিশ সুপার মো. আনোয়ার জাহিদ জানিয়েছেন, অভিযুক্তদের ডিএনএ স্যাম্পল ঢাকায় পাঠানো হয়েছে, রিপোর্ট পেলেই আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

শহীদ কন্যা লামিয়ার করুণ পরিণতি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও বিচার ব্যবস্থার ওপর নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে। সমাজে নারীর নিরাপত্তা, ন্যায়বিচার ও রাষ্ট্রীয় দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করার দাবিতে সোচ্চার হচ্ছে সাধারণ মানুষ।

মতামত দিন