গ্রীস্মকালে আধুনিক প্রযুক্তিতে টমেটো চাষে লাভবান রাকিবুল হাসান
মৌলভীবাজার প্রতিনিধি ॥ শ্রীমঙ্গলের আশিদ্রোন ইউনিয়নের পারেরটং গ্রামের কৃষক রাকিবুল হাসান আধুনিক মালচিং পদ্ধতি ও স্কাইনেট ব্যবহার করে গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষে অসাধারণ সাফল্য অর্জন করেছেন। চলতি বছরে তিনি বারি-৮ জাতের টমেটো চাষ করে ৫ লাখ টাকার বিক্রি সম্পন্ন করেছেন।রাকিবুল জানান, তিনি ৬০ শতক জমিতে টমেটো চাষ করেন। কৃষি অফিস থেকে প্রদর্শনী প্লটের অংশ হিসেবে চারা, সার, কীটনাশক, মালচিং পেপার ও পরিচর্যা বাবদ প্রণোদনা পেয়েছেন। এর ফলে উৎপাদন খরচ কমে যায় এবং গাছের স্বাস্থ্য ভালো থাকে। তিনি আরও বলেন, আগামি দিনে আরও লাখ টাকার টমেটো বিক্রি করার সম্ভাবনা রয়েছে।
উপজেলা কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, টমেটো সাধারণত শীতকালীন ফসল হলেও শ্রীমঙ্গলের মতো এলাকায় গ্রীষ্মকালেও সফলভাবে চাষ সম্ভব। মার্চে বীজ বপন ও মে মাসে চারা রোপণের মাধ্যমে জুন-জুলাইতে ফলন আসে। তবে টানা বৃষ্টি, তীব্র দাবদাহ এবং জলাবদ্ধতার কারণে অধিকাংশ কৃষক এই সময়ের চাষে লোকসানের মুখে পড়েন।
মালচিং পদ্ধতি গাছের গোড়ার মাটি বিশেষ পলিপেপার দিয়ে ঢেকে দেওয়ার একটি আধুনিক পদ্ধতি। এতে মাটির আর্দ্রতা বজায় থাকে, আগাছা কমে এবং মাটির তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ হয়। স্কাইনেট ব্যবহার করে ফসল অতিরিক্ত রোদ-বৃষ্টি, পোকা ও পাখি থেকে রক্ষা করা যায়।
পুষ্টিবিদরা জানান, টমেটোতে ভিটামিন ‘এ’, ভিটামিন ‘সি’, ক্যালসিয়াম ও লৌহ বিদ্যমান। এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি, ক্ষুধা বৃদ্ধি, পাকস্থলী সুস্থ রাখা এবং কোষ্টকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে। টমেটো সালাদ, তরকারি, টক, জ্যাম, সস, সুপ ও কেচাপ তৈরিতেও ব্যবহার হয়।
শ্রীমঙ্গল কৃষি অফিসের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. মাসুকুর রহমান বলেন, রাকিবুল হাসান প্রথমবারের মতো মালচিং পদ্ধতি ও স্কাইনেট ব্যবহার করে ৬০ শতক জমিতে টমেটো চাষ করে সাফল্য পেয়েছেন। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দিন আরও বলেন, সঠিক জাত ও প্রযুক্তি ব্যবহার করে কৃষকরা গ্রীষ্মকালীন চাষেও লাভবান হবেন।
রাকিবুলের এই সফলতা স্থানীয় কৃষকদের জন্য একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। কৃষি বিভাগ আশ্বাস দিয়েছে, তারা এই ধরনের উদ্যোগী কৃষকদের সব রকম সহায়তা প্রদান করবে।
মতামত দিন