গরু নিয়ে বিপাকে, পদ হারালেন বিএনপি নেতা
ঝালকাঠি প্রতিনিধি ॥ ঝালকাঠির রাজাপুরে পাওনা টাকা আদায়ের জন্য গরু নিয়ে যাওয়ার ঘটনা নতুন মোড় নেয় গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর। অবশেষে গাভীটি ফেরত দিলেন অভিযুক্ত স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা মো. বেল্লাল হোসেন খান। পাশাপাশি, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে তাকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।ঘটনার সূত্রপাত কয়েক বছর আগের আর্থিক লেনদেনকে ঘিরে। বেল্লাল দাবি করেন, ৯ বছর আগে নারগিস আক্তারের স্বামী আবু বকরকে তিনি ‘একটি বাড়ি একটি খামার’ প্রকল্প থেকে ২০ হাজার টাকা দেন। সেই টাকা না ফেরত দেওয়ায় সুদে-আসলে ৩০ হাজার টাকা দাবিতে গরু নিয়ে যান। এ নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
ভুক্তভোগী নারগিস আক্তার বলেন, “আমি গার্মেন্টসে চাকরি করে কিছু টাকা জমিয়ে গরুটি কিনেছি। আমার স্বামী দীর্ঘদিন ধরে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। গরুটি ছিল আমার একমাত্র রোজগারের উৎস।” তার মতে, গরুটি চলে যাওয়ার পর এক মাসের বাছুরটি খাওয়াতে না পেরে অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে তিনি আইনের আশ্রয় নেন এবং ঝালকাঠি আদালতে মামলা দায়ের করতে যান।
এ ঘটনায় ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা শুরু হলে দলীয় পর্যায়ে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার রাতে স্বেচ্ছাসেবক দলের রাজাপুর উপজেলা শাখা এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, বেল্লাল হোসেন খানের আচরণ দলের আদর্শবিরোধী এবং সামাজিকভাবে নিন্দনীয়। তাকে তাৎক্ষণিকভাবে সমস্ত পদ ও পদবি থেকে অব্যাহতি দিয়ে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গরুটি ফেরত দেওয়ার সময় গ্রামবাসী ও গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। তারা বলেন, এ ধরনের ঘটনা শুধু রাজনৈতিক শৃঙ্খলাকেই ক্ষতিগ্রস্ত করে না, সাধারণ মানুষের প্রতি নেতাদের দায়িত্ববোধকেও প্রশ্নবিদ্ধ করে।
বেল্লাল হোসেন খান অবশ্য তার সিদ্ধান্তকে “পাওনা আদায়ের প্রয়াস” বলেই ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তবে নেতাদের বক্তব্য অনুযায়ী, এমন আচরণ দলীয় মূল্যবোধের পরিপন্থী এবং কঠোর শাস্তির দাবিদার।
মতামত দিন