জেলার খবর

কুমিল্লায় বজ্রপাতে একদিনে ৫ জনের মৃত্যু

কুমিল্লা প্রতিনিধি ॥ কুমিল্লায় সোমবার বজ্রপাতে দুটি মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় ৫জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন দুই কিশোর ও দুই কৃষক। এই ঘটনা এলাকায় শোকের ছায়া নামিয়ে এনেছে। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মুরাদনগর উপজেলার কোরবানপুর পূর্ব পাড়া কবরস্থান সংলগ্ন মাঠে ধান কাটার সময় আকস্মিক বজ্রপাতে মারা যান দেওড়া গ্রামের জুয়েল ভূঁইয়া (৩৫) ও কোরবানপুর গ্রামের নিখিল দেবনাথ (৬০)। তারা মাঠে কাজ করছিলেন বলে নিশ্চিত করেছে স্থানীয় পুলিশ।

বাঙ্গরা বাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানান, স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে। নিখিল দেবনাথের প্রতিবেশী আব্দুল মান্নান বলেন, “হঠাৎ ভয়ানক বজ্রপাতের শব্দ শুনে আমরা দৌড়ে গেলে তাদের মৃত অবস্থায় দেখতে পাই।” এই ঘটনাটি স্থানীয়ভাবে ব্যাপক বেদনার সৃষ্টি করেছে।

অপরদিকে, দুপুরে বরুড়া উপজেলার পয়ালগাছা গ্রামে বজ্রপাতে আরও দুটি তাজা প্রাণ ঝরে যায়। নিহতরা হলেন ফাহাদ হোসেন (১৩) ও সায়মন হোসেন (১৩)। তারা বড় হরিপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র ছিল এবং ঘটনার সময় ঘুড়ি উড়াচ্ছিল। স্থানীয় বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম জানান, হালকা মেঘলা আকাশ থাকলেও বজ্রপাত এতটা হঠাৎ হবে, তা কেউ কল্পনাও করেনি। আহতদের হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।

বরুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বলেন, “এ ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে এলাকাবাসীর মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির প্রয়োজন রয়েছে।” জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান নিহতদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন এবং বলেন, “আবহাওয়া অধিদপ্তরের সতর্কতা অনুযায়ী জনসচেতনতা কার্যক্রম আরও জোরদার করা হবে।”

আবহাওয়া বিশেষজ্ঞ ড. সামছুল হক জানান, এপ্রিল-মে মাসে বজ্রপাতের প্রবণতা বাড়ে এবং খোলা মাঠ, উঁচু গাছ কিংবা জলাশয়ের পাশে অবস্থান ঝুঁকিপূর্ণ। স্থানীয়রা বলছেন, গত এক মাসে এটি প্রথম বজ্রপাতে প্রাণহানির ঘটনা হলেও এটি একটি সতর্ক সংকেত। তারা বজ্রপাত প্রতিরোধে স্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন।

জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের পরিচালক ডা. নুরুল ইসলাম বলেন, “বজ্রপাতের সময় উঁচু স্থান এড়িয়ে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেওয়া উচিত। প্রাথমিক চিকিৎসা প্রশিক্ষণ অব্যাহত থাকবে।”

মতামত দিন