শহীদ পরিবার ও জুলাই যোদ্ধাদের জন্য নতুন অনুদান-বিধিমালা জারি
ডেস্ক রিপোর্ট ॥ মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় নতুন বিধিমালা জারি করেছে, যা শহীদ পরিবারের স্বামী বা স্ত্রী, সন্তান এবং বাবা-মায়ের মধ্যে এককালীন অনুদান এবং মাসিক ভাতা সমান তিন ভাগে বণ্টন নিশ্চিত করবে। নতুন নিয়ম অনুসারে শহীদ পরিবারের সদস্যদের মধ্যে অনুদান বিতরণে স্বচ্ছতা এবং দ্বন্দ্ব কমানো হবে।বিধিমালায় বলা হয়েছে, শহীদ পরিবারের স্বামী বা স্ত্রী অনুদানের এক-তৃতীয়াংশ পাবেন। যদি একাধিক স্ত্রী থাকেন, তবে তা সমানভাবে ভাগ হবে। শহীদের ঔরসজাত বা গর্ভজাত সন্তানও এক-তৃতীয়াংশ ভাগে ভাতা পাবেন। একাধিক সন্তান থাকলে তাদের মধ্যে সমানভাবে বণ্টন করা হবে। শহীদ ব্যক্তির বাবা-মা বাকি এক-তৃতীয়াংশ পাবেন। স্বামী বা স্ত্রী অনুপস্থিত থাকলে তাদের অংশ সন্তান ও বাবা-মায়ের মধ্যে সমানভাবে ভাগ হবে।
নতুন বিধিমালায় উল্লেখ করা হয়েছে, শহীদ পরিবার বা যোদ্ধার কোনো সদস্য মারা গেলে তার মাসিক ভাতা বন্ধ হবে। স্বামী বা স্ত্রী অন্যত্র বিয়ে করলে তাদের ভাতার অংশ বাতিল হবে। আহত জুলাই যোদ্ধা মারা গেলে তাকে শহীদ হিসেবে গণ্য করা হবে এবং পরিবার এককালীন ৩০ লাখ টাকা সমমূল্যের সঞ্চয়পত্র ও মাসিক ২০ হাজার টাকা ভাতা পাবেন। এছাড়া আহতদের চিকিৎসা সুবিধা সরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বিনামূল্যে প্রদান করা হবে।
শহীদ পরিবার ও জুলাই যোদ্ধাদের পুনর্বাসন ও কল্যাণের জন্য তিনটি পর্যায়ের কমিটি গঠন করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বা উপদেষ্টা, জেলা কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসক, এবং উপজেলা কমিটির সভাপতি ইউএনও হবেন।
বিধিমালায় পুনর্বাসন কার্যক্রমে উপার্জনমুখী প্রশিক্ষণের কথাও বলা হয়েছে। এতে তথ্যপ্রযুক্তি, ডিজাইন, ফ্রিল্যান্সিং, মেকানিক্যাল, কৃষি, পশুপালন, মৎস্য চাষ, পোল্ট্রি ফার্মিং, বস্ত্রশিল্প এবং খাদ্য ও আতিথেয়তা ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণ অন্তর্ভুক্ত থাকবে। এছাড়াও ঋণ বা সহায়তা প্রদানের সুযোগ থাকবে।
বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য সালিশ বোর্ড গঠন করা হবে। বোর্ডে শহীদ পরিবারের বিরোধী সদস্য, মহাপরিচালকের মনোনীত একজন প্রতিনিধি এবং দুই পক্ষের মনোনীত একজন সালিশকারী থাকবেন। বোর্ডের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ৩০ দিনের মধ্যে মহাপরিচালকের কাছে আপিল করা যাবে।
মন্ত্রণালয় কর্মকর্তা ও উপদেষ্টা জানান, নতুন বিধিমালা কার্যকর হলে শহীদ পরিবার ও জুলাই যোদ্ধাদের আর্থিক সহায়তা বিতরণ আরও স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হবে। এটি পরিবারে অনুদান বিতরণের সময় সংঘটিত দ্বন্দ্ব কমাতে এবং শহীদদের প্রতি সম্মান বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
মতামত দিন