জাতীয়

মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার খুলছে, বাংলাদেশে আনন্দের জোয়ার

ডেস্ক রিপোর্ট ॥ দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার আবারও বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য উন্মুক্ত হতে যাচ্ছে, যা দেশের অর্থনীতি ও কর্মসংস্থানের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্যোগে এই প্রক্রিয়া এখন প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে। জানা গেছে, প্রাথমিকভাবে ১২ লাখ শ্রমিকের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হচ্ছে, যার মধ্যে ৫০ হাজার শ্রমিককে বিনা খরচে পাঠানোর পরিকল্পনা রয়েছে।

এই উদ্যোগ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে মালয়েশিয়ার পুত্রজয়ায় বৃহস্পতিবার একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল এবং মালয়েশিয়ার দুই মন্ত্রী অংশ নিচ্ছেন। বৈঠকে একটি গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে পুরো প্রক্রিয়াকে আরও স্বচ্ছ ও কার্যকর করার প্রত্যাশা করা হচ্ছে।

উল্লেখযোগ্য যে, গত বছর অক্টোবরে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী ড. আনোয়ার ইব্রাহিম বাংলাদেশ সফর করেন। সে সময় শ্রম, বিনিয়োগ এবং রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে আলোচনা হয়। এই সফরের ধারাবাহিকতায় শ্রমবাজার উন্মুক্ত করার বিষয়টি অগ্রাধিকার পায়। ড. আনোয়ার স্পষ্ট করে বলেন, বাংলাদেশি শ্রমিকরা আধুনিক দাস নয়; বরং তাদের মর্যাদা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করেই নিয়োগ কার্যক্রম পরিচালিত হবে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এই উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশ প্রতিবছর কয়েক বিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স লাভ করতে পারবে। কুয়ালালামপুরে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নির্ধারিত সংখ্যক শ্রমিক পাঠানো গেলে বছরে প্রায় ৫ বিলিয়ন ডলার অতিরিক্ত রেমিটেন্স আসতে পারে।

তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই প্রক্রিয়ার মূল চ্যালেঞ্জ হবে অভিবাসন ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা ও শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। কার মাধ্যমে পাঠানো হলো তার চেয়ে বেশি জরুরি হলো শ্রমিকের অধিকার রক্ষা এবং কর্মপরিবেশের গুণগত মান।

মোটকথা, মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার পুনরায় উন্মুক্ত হওয়া বাংলাদেশের জন্য এক ঐতিহাসিক সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিচ্ছে। এই সুযোগ সঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারলে দেশের অর্থনীতিতে নতুন গতি সঞ্চার হবে এবং হাজার হাজার পরিবারে ফিরে আসবে আশার আলো।

মতামত দিন