বাংলাদেশ-পাকিস্তান ঐতিহাসিক বৈঠক, নতুন অধ্যায়ের সূচনা
ডেস্ক রিপোর্ট ॥ রোববার (২৪ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ-পাকিস্তান পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক শেষে দুই দেশের মধ্যে একটি চুক্তি ও চারটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরিত হয়েছে। স্বাধীনতার পর এ ধরনের উচ্চপর্যায়ের বৈঠক এই প্রথম হওয়ায় এটি কূটনৈতিক ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। বৈঠক প্রায় দুই ঘণ্টা স্থায়ী হয়।বৈঠক শেষে পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার সাংবাদিকদের জানান, স্বাক্ষরিত চুক্তি ও এমওইউ দুই দেশের সম্পর্ককে আরও গভীর ও ফলপ্রসূ করবে। স্বাক্ষরিত চুক্তির মধ্যে রয়েছে সরকারি ও কূটনৈতিক পাসপোর্টধারীদের জন্য ভিসা বিলোপ।
এছাড়া চারটি এমওইউর মধ্যে রয়েছে—দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য বিষয়ক যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন, সংস্কৃতি বিনিময় কর্মসূচি, বাংলাদেশ ফরেন সার্ভিস একাডেমি ও পাকিস্তান ফরেন সার্ভিস একাডেমির মধ্যে সহযোগিতা এবং দুই দেশের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থার মধ্যে সমন্বয় বৃদ্ধি। একই সঙ্গে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস) ও পাকিস্তানের ইনস্টিটিউট অব স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ ইসলামাবাদ (আইএসএসআই)-এর মধ্যে সহযোগিতা স্থাপন নিয়েও আলোচনা হয়েছে।
বৈঠকে সাংবাদিকদের প্রশ্নে ১৯৭১ সালের গণহত্যার প্রসঙ্গে ইসহাক দার বলেন, এ বিষয়টি ইতোমধ্যে নিষ্পত্তি হয়েছে। তিনি উল্লেখ করেন, ১৯৭৪ সালের ত্রিপক্ষীয় চুক্তি এবং ২০০২ সালে পাকিস্তানের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট পারভেজ মোশাররফের সফরের সময় বিষয়টির সমাধান হয়েছে। সাংবাদিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “আপনাদের হৃদয় পরিষ্কার করুন এবং সামনে এগিয়ে যান।”
এর আগে শনিবার (২৩ আগস্ট) শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছালে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে স্বাগত জানান বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব। ওইদিনই তিনি বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপির নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন।
কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই বৈঠক দুই দেশের দীর্ঘমেয়াদি কূটনৈতিক, বাণিজ্যিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করার ভিত্তি স্থাপন করবে।
মতামত দিন