জাতীয়

জামায়াতের হাতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়: নতুন সংকট

ডেস্ক রিপোর্ট ॥ চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের পর শিক্ষা খাতের নিয়ন্ত্রণ হাতবদল হয়ে গেছে। আওয়ামী লীগের জায়গায় এসেছে জামায়াতপন্থি গোষ্ঠী। বিশেষ করে মাদরাসা শিক্ষায় জামায়াতের দখল চরমে পৌঁছেছে। অভিযোগ রয়েছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও বর্তমান ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি একসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা জামায়াতের আমির ছিলেন। প্রোভিসি, ট্রেজারার, রেজিস্ট্রার, ডিন, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকসহ শীর্ষ পদগুলো জামায়াতের দখলে।

বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানও জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতা। কারিকুলাম বিশেষজ্ঞ হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন এক কট্টর সালাফি মতাদর্শের ব্যক্তি, যার চিন্তাধারা জামায়াতের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। বোর্ডের পরিচালনা পর্ষদ, কমিটি ও উপকমিটিতেও জামায়াত নেতাদের পূর্ণ আধিপত্য রয়েছে।

মাদরাসা শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালকসহ বেশিরভাগ কর্মকর্তাই জামায়াত থেকে উঠে এসেছেন। মাদরাসা শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের প্রধান পদগুলোও জামায়াত নেতাদের দখলে, যা শিক্ষকদের আদর্শগতভাবে প্রভাবিত করতে ব্যবহৃত হচ্ছে। সরকারি আলিয়া মাদরাসাগুলোতেও নিয়ম বহির্ভূতভাবে জামায়াত রোকনদের পদায়ন হয়েছে।

সরকারি অর্থে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সভা, সেমিনার ও প্রশিক্ষণের নামে জামায়াতের প্রচারণা চালানো হচ্ছে। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের আকিদা বিকৃত করার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন অনেক শিক্ষক। তাদের মতে, মাদরাসা শিক্ষার ইতিহাস ও ঐতিহ্য পরিবর্তনের জন্য পাঠ্যপুস্তকও বদলানো হচ্ছে।

বিএনপির শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম বলেন, আওয়ামী লীগ আমলে অনেক জামায়াত নেতা গোপনে সুবিধা নিয়েছে, আর এখন প্রকাশ্যে এসেছে। তিনি মনে করেন, এ আন্দোলনের লক্ষ্য নির্বাচন পেছানো এবং সরকারকে বিব্রত করা।

শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাত পুরোপুরি জামায়াতের নিয়ন্ত্রণে চলে যাওয়ার অভিযোগও উঠেছে। ফলে নীতি নির্ধারণ থেকে শুরু করে মাঠ পর্যায়ের কার্যক্রম পর্যন্ত সব কিছুতেই প্রভাব বিস্তার করছে তারা।

শিক্ষাখাতে এই রাজনৈতিক আধিপত্য নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে রাজনৈতিক হাতিয়ার বানানো হলে তা দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য ভয়ঙ্কর পরিণতি বয়ে আনবে।

মতামত দিন