জাতীয়

জামায়াতের নিবন্ধন-প্রতীক ইস্যুতে সিদ্ধান্তের দ্বারপ্রান্তে ইসি

ডেস্ক রিপোর্ট ॥ বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। একাধিক সূত্র জানিয়েছে, দলটির নিবন্ধন ফিরিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি পুরোনো নির্বাচনী প্রতীক ‘দাঁড়িপাল্লা’ ফেরত দেওয়ার বিষয়ে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে কমিশন। যদিও এখনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসেনি, তবে ইসির উচ্চ পর্যায়ে আলোচনা প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে।

২০১৩ সালে হাইকোর্টের রায়ে জামায়াত ইসলামী তাদের নিবন্ধন হারায়। ধর্মভিত্তিক রাজনীতির অভিযোগ, যুদ্ধাপরাধে জড়িত নেতাদের উপস্থিতি এবং সংবিধানবিরোধী নীতিমালার কারণে এ সিদ্ধান্ত এসেছিল। এরপর জামায়াত ‘বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি (বিডিপি)’ নামেও নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধনের জন্য আবেদন করে, কিন্তু তাতেও সাফল্য মেলেনি। তবে দলের পক্ষ থেকে নিবন্ধন ফিরে পাওয়ার জন্য আইনি ও রাজনৈতিক লড়াই অব্যাহত ছিল।

ইসির একটি সূত্র জানায়, কমিশনের মধ্যে এ বিষয়ে মতানৈক্য থাকলেও অধিকাংশ কমিশনার নিবন্ধন পুনর্বহালের পক্ষে রয়েছেন। রাজনৈতিক বাস্তবতা এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের স্বার্থে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে বলে তারা মনে করেন। তবে এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হলে, সেটি দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে বড় ধরনের প্রভাব ফেলবে—এ বিষয়ে কেউই দ্বিমত পোষণ করছেন না।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, জামায়াতকে নিবন্ধন ফিরিয়ে দিলে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তারা নতুন করে সক্রিয় হওয়ার সুযোগ পাবে। এতে দেশের রাজনৈতিক সমীকরণে পরিবর্তন আসতে পারে, বিশেষ করে দক্ষিণাঞ্চল ও উত্তরাঞ্চলের নির্দিষ্ট ভোট ব্যাংকে প্রভাব ফেলবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

তবে বিষয়টি নিয়ে ইতোমধ্যে সামাজিক ও রাজনৈতিক অঙ্গনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। একটি পক্ষ এটিকে গণতান্ত্রিক সহনশীলতার উদাহরণ হিসেবে দেখলেও, অন্য পক্ষ বলছে এটি বিচার বিভাগের পূর্ববর্তী আদেশকে অগ্রাহ্য করার শামিল।

নির্বাচন কমিশনের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা খুব শিগগিরই সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে দেওয়া হবে। বিষয়টি স্পর্শকাতর হওয়ায় ইসি এখন ধাপে ধাপে এগোচ্ছে।

মতামত দিন