জাতীয়

আন্তর্জাতিক দরপত্রে পাঠ্যবই ছাপার পরিকল্পনা, উদ্বেগে দেশি শিল্প

ডেস্ক রিপোর্ট ॥ সরকার ২০২৬ শিক্ষাবর্ষের মাধ্যমিক স্তরের পাঠ্যবই ছাপার কাজে এবার আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর মাধ্যমে বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোও অংশ নিতে পারবে এবং দেশের বাইরে প্রায় ৬০০ কোটি টাকা চলে যাবে।

গত কয়েক বছরে দেশি প্রেস মালিকরা এই কাজ করে আসলেও এবার বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোকে অগ্রাধিকার দেওয়া হলে দেশের কাগজশিল্প ও ছাপাখানাগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মুদ্রণ শিল্প সমিতির নেতারা। তাদের মতে, বই ছাপার কাজে জড়িত লাখো শ্রমিক বেকার হয়ে যেতে পারেন এবং ছাপাখানাগুলো দেউলিয়া হওয়ার ঝুঁকিতে পড়বে।

অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে মাধ্যমিক স্তরের ১১ কোটি ৮৯ লাখ ৩২ হাজার ৮০২ কপি বই ছাপার প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়, যার ব্যয় ধরা হয় ৬০৩ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। প্রস্তাবটি কমিটি অনুমোদন দেয়নি, তবে আন্তর্জাতিক দরপত্রের সময়সীমা কমানো হয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিদেশি ছাপাখানার কারণে দেশের কাগজশিল্প ও মুদ্রণ শিল্পের দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি হতে পারে। বিদেশি প্রতিষ্ঠান ভ্যাট-ট্যাক্স সরকার বহন করে, ফলে দেশি প্রতিষ্ঠানগুলো আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতায় অপ্রতিযোগী হয়ে পড়ে।

জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য করেননি। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানান, অর্থনৈতিক কমিটির সভায় এনসিটিবির কোনো প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন না।

বিভিন্ন মুদ্রণ শিল্প মালিক ও শ্রমিকরা সরকারের সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করছেন। তারা দেশি স্বার্থ ও শ্রমিকদের নিরাপত্তার জন্য আন্তর্জাতিক দরপত্রে যাওয়ার পরিকল্পনা পুনর্বিবেচনা করতে সরকারের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, দেশি শিল্প ও শ্রমিকদের স্বার্থ অগ্রাহ্য করে বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে অগ্রাধিকার দিলে দেশের অর্থনীতি ও শিক্ষাব্যবস্থার ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।

মতামত দিন