৭৩ বছরের নিষেধাজ্ঞায় বদলের ইঙ্গিত, শিথিল হচ্ছে সৌদি মদনীতি
আন্তর্জাতিক ডেস্ক ॥ সৌদি আরবের ৭৩ বছরের কঠোর মদ নিষেধাজ্ঞায় বড় পরিবর্তন আসছে। ২০২৬ সাল থেকে দেশটির নির্দিষ্ট লাইসেন্সধারী স্থানগুলোতে মদ বিক্রি ও পান করার অনুমতি দেওয়া হতে পারে। এটি হবে ঐতিহাসিক নিষেধাজ্ঞার নতুন রূপ, যার লক্ষ্য অর্থনৈতিক বৈচিত্র্য, বৈশ্বিক পর্যটক আকর্ষণ এবং ‘ভিশন ২০৩০’ কর্মসূচির বাস্তবায়ন।১৯৫২ সাল থেকে সৌদি আরবে মদ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ছিল, যা ইসলামি শরিয়াহ অনুযায়ী হারাম হিসেবে বিবেচিত। নিষেধাজ্ঞা শুধু মুসলিমদের ওপর নয়, বরং অমুসলিম বিদেশিদের জন্যও সমানভাবে প্রযোজ্য ছিল। তবে পরিবর্তন শুরু হয়েছে ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকেই, যখন রিয়াদে কূটনৈতিক পাড়ায় অমুসলিম কূটনীতিকদের জন্য সীমিতভাবে মদ বিক্রির অনুমতি দেওয়া হয়।
নতুন পরিকল্পনা অনুযায়ী, দেশজুড়ে প্রায় ৬০০টি নির্দিষ্ট স্থানে মদ বিক্রি ও পান করার সুযোগ তৈরি করা হবে। এর মধ্যে রয়েছে পাঁচতারকা হোটেল, বিলাসবহুল রিসোর্ট, কূটনৈতিক এলাকা, এবং দেশটির উচ্চ পর্যটন প্রকল্প যেমন নিওম, সিন্দালা দ্বীপ ও রেড সি প্রজেক্ট। এতে বিদেশি পর্যটক ও বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করা সহজ হবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, সৌদি আরবের এমন সিদ্ধান্ত দেশের অর্থনীতিকে তেল নির্ভরতা থেকে সরিয়ে আনতে সহায়তা করবে। ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বমঞ্চে সৌদি আরবকে একটি আধুনিক, বহুমুখী অর্থনীতির রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করাই ‘ভিশন ২০৩০’-এর মূল লক্ষ্য।
সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের নেতৃত্বে দেশটি সামাজিক ও অর্থনৈতিক সংস্কারে এগিয়ে যাচ্ছে। এই পরিবর্তনের ফলে পর্যটন খাত, বিনোদন শিল্প এবং স্থানীয় কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
তবে ধর্মীয়ভাবে রক্ষণশীল জনগোষ্ঠীর মধ্যে এ সিদ্ধান্ত কতটা গ্রহণযোগ্যতা পাবে, তা নিয়ে প্রশ্ন থাকছেই। কিন্তু সরকার মনে করছে, আধুনিকতার সঙ্গে ঐতিহ্যের ভারসাম্য রক্ষা করে ভবিষ্যতের সৌদি আরব গড়া সম্ভব।
বিশ্লেষকদের মতে, এই পদক্ষেপ একটি নতুন যুগের সূচনা, যেখানে কঠোর ধর্মীয় বিধি-বিধানের সঙ্গে আধুনিক বাস্তবতা ও বৈশ্বিক সংযোগের নতুন সমঝোতা গড়ে উঠবে।
মতামত দিন