যুদ্ধকালীন নেতৃত্ব বদল, ক্ষমতা হস্তান্তর খামেনীর
আন্তর্জাতিক ডেস্ক ॥ ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি তার যুদ্ধকালীন সর্বময় ক্ষমতা ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনী (আইআরজিসি)-এর শীর্ষ পরিষদের হাতে হস্তান্তর করেছেন। ইরানভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ইরান ইন্টারন্যাশনাল এই খবর প্রকাশ করে জানায়, সম্ভাব্য পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধ পরিস্থিতিতে দেশটির নেতৃত্ব কাঠামো সচল রাখতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিশ্লেষকরা একে কৌশলগত পূর্বপ্রস্তুতি হিসেবে দেখছেন, যাতে শীর্ষ নেতৃত্বে ক্ষতি হলেও জাতীয় কমান্ড ও নিয়ন্ত্রণ ব্যাহত না হয়।প্রতিবেদনে আরও জানানো হয়েছে, খামেনি বর্তমানে রাজধানী তেহরানের উত্তরে লাভিজান এলাকার একটি সুরক্ষিত বাঙ্কারে অবস্থান করছেন। তার সঙ্গে রয়েছেন পরিবারের ঘনিষ্ঠ সদস্যরা এবং ছেলে মোজতবা খামেনি, যাকে ভবিষ্যতের সর্বোচ্চ নেতা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এই পদক্ষেপ ইঙ্গিত দেয় যে ইরান তার সর্বোচ্চ নেতৃত্বের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই সর্বোচ্চ সতর্কতায় রয়েছে।
এদিকে, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার সোশ্যাল প্ল্যাটফর্ম ‘ট্রুথ সোশ্যালে’ এক পোস্টে খামেনির অবস্থান সম্পর্কে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন। তিনি লেখেন, “আমরা জানি খামেনি কোথায় আছেন। তিনি এখন একটি সহজ লক্ষ্যবস্তু, যদিও তাকে এখনই হত্যা করা হবে না।” ট্রাম্পের এ মন্তব্য আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে।
এসময় ইসরাইল-ইরান চলমান সংঘাত অষ্টম দিনে গড়িয়েছে। দুই পক্ষের হামলা-পাল্টা হামলায় পারমাণবিক স্থাপনাসহ একাধিক সামরিক ঘাঁটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইরান জানিয়েছে, তারা এর পাল্টা জবাব দিচ্ছে এবং প্রয়োজনে আরও কঠোর প্রতিক্রিয়া জানানো হবে।
নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মাসউদ পেজেশকিয়ান এ বিষয়ে বলেন, “ইসরাইল যদি হামলা বন্ধ না করে, তাহলে আমরা এমন জবাব দেব যা এর আগে কখনও দেয়নি ইরান।” তিনি উল্লেখ করেন, “এই সংঘাত কেবল ইরান ও ইসরাইল নয়, বরং পুরো বিশ্বের জন্যই হুমকিস্বরূপ।”
এই প্রেক্ষাপটে খামেনির ক্ষমতা হস্তান্তর এবং গোপন বাঙ্কারে অবস্থান স্পষ্টভাবে ইরানের রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা অগ্রাধিকার এবং যুদ্ধকালীন প্রস্তুতির ইঙ্গিত বহন করে। মধ্যপ্রাচ্যের উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক কূটনীতি ও নিরাপত্তা পরিস্থিতি আরও জটিল আকার ধারণ করতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।
মতামত দিন