মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ওপর নতুন দমন-নিপীড়ন, লাশ ভাসছে নদীতে
আন্তর্জাতিক ডেস্ক ॥ মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ওপর নতুনভাবে দমন ও নির্যাতন শুরু হয়েছে ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে। এবার মিয়ানমার সেনাবাহিনীর পাশাপাশি আরাকান আর্মিও এই নিপীড়নে অংশগ্রহণ করছে। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট হাজারো রোহিঙ্গা নাফ নদী পার হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়ার চেষ্টা করলেও ড্রোন ও আর্টিলারি হামলায় শতাধিক ব্যক্তি নিহত হয়।জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাখাইন রাজ্যে সংঘাত বাড়ার ফলে রোহিঙ্গা ও অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর নিরাপত্তা গুরুতরভাবে হুমকির মুখে। ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে ৪০৯টি বিমান হামলা এবং ২৭৪টি আর্টিলারি হামলার তথ্য নিশ্চিত হয়েছে। এ পর্যন্ত কমপক্ষে ৩৭৪ বেসামরিক নাগরিক হতাহত হয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে পশ্চিমা সামরিক কমান্ড আরাকান আর্মির দখলে আসে। ৫ আগস্ট মংডু শহরের পশ্চিমে নাফ নদীর তীরে হাজারো রোহিঙ্গা নিরাপত্তা খুঁজতে জড়ো হয়, কিন্তু তাদের ওপর ড্রোন ও আর্টিলারি হামলা চালানো হয়। নৌকায় পালানোর চেষ্টা করলেও অনেকেই মারা যান, যার মধ্যে শিশু ও বেসামরিক ব্যক্তিরা রয়েছেন।
২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থান থেকে ২০২৫ সালের আগস্ট পর্যন্ত প্রায় ৭ হাজার ১০০ জন নিহত হয়েছে, যার এক-তৃতীয়াংশ নারী ও শিশু। রাজনৈতিক কারণে ২৯,৫৬০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং ২২ হাজারেরও বেশি মানুষ এখনও সামরিক নিয়ন্ত্রিত আদালতের মাধ্যমে আটক।
জাতিসংঘ মানবাধিকার হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক বলেন, সামরিক বাহিনী এবং আরাকান আর্মি প্রায় সম্পূর্ণ দায়মুক্তভাবে কাজ করছে। এতে বেসামরিক জনগণের দুর্ভোগের চক্র অব্যাহত রয়েছে। তিনি আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন এবং দায়মুক্তি নিয়ে নিরাপত্তা পরিষদে মিয়ানমারের পরিস্থিতি আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে প্রস্তাব করার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
মতামত দিন