গাজা দখলের পরিকল্পনায় যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি হস্তক্ষেপ করবে না: ট্রাম্প
আন্তর্জাতিক ডেস্ক ॥ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইঙ্গিত দিয়েছেন, যদি ইসরায়েল পুরো গাজা ভূখণ্ড দখলের সিদ্ধান্ত নেয়, তাতে যুক্তরাষ্ট্র বাধা দেবে না। বুধবার (৬ আগস্ট) প্রকাশিত বার্তায় আনাদোলু সংবাদ সংস্থা এ তথ্য জানিয়েছে। ট্রাম্প বলেন, গাজা দখলের বিষয়টি মূলত ইসরায়েলের ওপর নির্ভর করছে এবং তিনি এ বিষয়ে কিছু বলতে পারছেন না। তার প্রধান উদ্বেগের বিষয় হলো গাজার মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা।ট্রাম্প স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সাংবাদিকদের জানান, গাজার মানুষের খাদ্য ও মানবিক পরিস্থিতি নিয়েই তার সবচেয়ে বেশি মনোযোগ। তিনি বলেন, “বাকি বিষয়গুলো সম্পর্কে আমি কিছু বলতে পারি না। এটা মূলত ইসরায়েলের ওপর নির্ভর করছে।” ট্রাম্পের এই বক্তব্য ইঙ্গিত দেয়, যুক্তরাষ্ট্র গাজা দখল বা সামরিক অভিযানের সিদ্ধান্তে সরাসরি হস্তক্ষেপ করবে না।
যুক্তরাষ্ট্র প্রতিবছর ইসরায়েলকে বিপুল সামরিক সহায়তা প্রদান করে আসছে। ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলি হামলার পর এই সহায়তা আরও বেড়েছে। ইসরায়েল গাজার ৮৬ শতাংশ এলাকা সামরিক অঞ্চলে রূপান্তর করেছে, যেখানে ফিলিস্তিনিরা সীমিত জায়গায় গাদাগাদি করে বসবাস করতে বাধ্য হচ্ছেন। নতুন সামরিক অভিযান বা গাজা দখলের প্রচেষ্টা পরিস্থিতি আরও বিপজ্জনক করে তুলতে পারে।
এছাড়া, গাজায় আটক বন্দিদের নিরাপত্তাও উদ্বেগের বিষয়। ধারণা করা হচ্ছে, হামাস ও অন্যান্য ফিলিস্তিনি সংগঠনের কাছে এখনও বেশ কিছু ইসরায়েলি নাগরিক বন্দি রয়েছেন। জাতিসংঘের শীর্ষ কর্মকর্তা মিরোস্লাভ ইয়েনচা বলেছেন, গাজা পুরোপুরি দখলের চেষ্টা “বিপর্যয়কর পরিণতি” ডেকে আনতে পারে। তিনি বলেন, “আন্তর্জাতিক আইন স্পষ্টভাবে বলছে— গাজা ভবিষ্যতের ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের অবিচ্ছেদ্য অংশ।”
২০০৫ সালে ইসরায়েল গাজা থেকে সেনা ও বসতি সরিয়ে নিলেও, আকাশপথ, পানি সীমা ও প্রবেশপথ নিয়ন্ত্রণ এখনও কার্যত দখল ধরে রেখেছে। ২০২৩ সালের যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ইসরায়েলের উগ্রপন্থি নেতারা গাজায় পুনরায় সেনা মোতায়েন ও বসতি গড়ার আহ্বান জানাচ্ছেন। ট্রাম্পও ফেব্রুয়ারিতে এ পরিকল্পনার পক্ষে ছিলেন এবং গাজা ফাঁকা করে সেখানে “মধ্যপ্রাচ্যের রিভিয়েরা” গঠনের সম্ভাবনার কথা বলেছিলেন।
ট্রাম্প উল্লেখ করেন, যুক্তরাষ্ট্র গাজায় ইতিমধ্যেই ৬ কোটি ডলার সহায়তা দিয়েছে। এর মধ্যে জিএইচএফকে ৩ কোটি ডলার দেওয়া হয়েছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, ইসরায়েল এবং আরব দেশগুলো খাদ্য বিতরণ ও তহবিলের কাজে সহযোগিতা করবে।
মতামত দিন