গাজা এখন মানবিক বিপর্যয়: জাতিসংঘ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক ॥ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর টানা বিমান হামলা ও গোলাবর্ষণে ফিলিস্তিনি জনগণের জীবন সংকটময় হয়ে উঠেছে। বুধবার (২১ মে) ভোর থেকে শুরু হওয়া সর্বশেষ দফার হামলায় অন্তত ৯৩ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে মেডিকেল সূত্র। নিহতদের মধ্যে নারী ও শিশুও রয়েছে। দেইর আল-বালাহ শহরের একটি গুদামে আশ্রয় নেওয়া বাস্তুচ্যুতদের ওপর সরাসরি হামলায় প্রাণ হারিয়েছে কমপক্ষে ১০ জন, যাদের মধ্যে সবচেয়ে কম বয়সী শিশুটির বয়স মাত্র ৭ বছর। এই হৃদয়বিদারক ঘটনায় পুরো অঞ্চলে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।মানবিক পরিস্থিতি চরম অবনতির দিকে ধাবিত হচ্ছে। জাতিসংঘ জানিয়েছে, গাজায় প্রবেশ করা ত্রাণ সরবরাহ চাহিদার তুলনায় অত্যন্ত সীমিত। খাদ্য, পানি ও ওষুধের সংকট এতটাই প্রকট যে, চিকিৎসা ব্যবস্থাও কার্যত অচল হয়ে পড়েছে। অনেক হাসপাতালে জরুরি অস্ত্রোপচার বন্ধ রাখা হয়েছে। হৃদরোগ ও রক্তনালিজনিত চিকিৎসা থেমে গেছে যন্ত্রপাতি ও ওষুধের অভাবে। এমনকি চিকিৎসকরা বাধ্য হয়ে পুরনো যন্ত্রপাতি পুনর্ব্যবহার করছেন, যা মানবিক বিপর্যয়ের গভীরতা নির্দেশ করে।
মেডিকেল সাপ্লাই মাত্র দুই সপ্তাহ চলার মতো মজুদে রয়েছে বলে জানা গেছে। এর ফলে হাসপাতালগুলোকে জীবনরক্ষাকারী অস্ত্রোপচারের জন্য কঠোরভাবে রোগী বাছাই করতে হচ্ছে। এতে বহু গুরুতর রোগী চিকিৎসার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। জাতিসংঘ ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো এই অবস্থাকে “মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ” বলে আখ্যায়িত করেছে।
এদিকে পশ্চিম তীরের জেনিন শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি বাহিনী অভিযান চালিয়ে বিদেশি কূটনীতিকদের লক্ষ্য করেও গুলি চালায়। এ ঘটনায় জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক মহল তীব্র উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তারা মানবিক ও কূটনৈতিক মিশনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি জরুরি হস্তক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অবিলম্বে একটি কার্যকর যুদ্ধবিরতি, ত্রাণ সরবরাহের পূর্ণ সুযোগ এবং রাজনৈতিক সমাধানের উদ্যোগ গ্রহণ না করা হলে গাজার পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ রূপ নিতে পারে। আন্তর্জাতিক মহলের সম্মিলিত পদক্ষেপ এখন সময়ের সবচেয়ে বড় দাবি।
মতামত দিন