আন্তর্জাতিক

গাজায় ফের ইসরাইলি হামলা, ২৪ ঘণ্টায় নারী-শিশুসহ নিহত ৭১

আন্তর্জাতিক ডেস্ক ॥ ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি বাহিনীর টানা বিমান হামলায় মৃত্যু ও ধ্বংসযজ্ঞ অব্যাহত রয়েছে। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় আরও অন্তত ৭১ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। নিহতদের মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যাই বেশি, যা এই যুদ্ধকে আরও মানবিক সংকটে পরিণত করছে।

গাজার হাসপাতালগুলোতে আহতদের উপচে পড়া ভিড় দেখা যাচ্ছে। চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। চিকিৎসা সামগ্রীর ঘাটতি ও অব্যাহত বোমা হামলায় জরুরি সেবাগুলো মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

একইসঙ্গে, বিতর্কিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের পরিচালিত সহায়তাকেন্দ্রগুলোতেও ব্যাপক প্রাণহানির খবর মিলেছে। সংস্থাটির তথ্য অনুযায়ী, গত এক মাসে এসব কেন্দ্রে অন্তত ৫৪৯ জন প্রাণ হারিয়েছেন, যাদের অধিকাংশই ছিলেন খাদ্য সহায়তার অপেক্ষায়। এখন এই সহায়তা কেন্দ্রগুলো ‘মৃত্যুর ফাঁদ’ হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

ইসরাইলি জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন গভির সম্প্রতি এক বিবৃতিতে গাজায় মানবিক সহায়তা পুরোপুরি বন্ধের আহ্বান জানান। তার ভাষায়, “শত্রুর প্রতি সহানুভূতির কোনো স্থান নেই”। তিনি এই সহায়তাকে ইসরাইলের জন্য ‘লজ্জাজনক’ বলেও উল্লেখ করেন।

ইসরাইলের এই কঠোর অবস্থানের কারণে উত্তর গাজাগামী করিডোরগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ফলে সহায়তার পথ রুদ্ধ হয়ে পড়েছে লাখো ক্ষুধার্ত মানুষের জন্য। সহায়তা কার্যক্রম দুই দিনের জন্য পুরোপুরি স্থগিত করা হয়েছে, যা মানবিক বিপর্যয়কে আরও তীব্র করছে।

অন্যদিকে, গাজায় আটক ইসরাইলি জিম্মিদের মুক্তির দাবিতে তেল আবিবে বিক্ষোভ করেছে তাদের পরিবার। তারা যুদ্ধ বন্ধে যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কার্যকর হস্তক্ষেপের দাবি জানিয়েছে।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের এক হামলার মধ্য দিয়ে এই সংঘাত শুরু হয়, যেখানে ১২০০ ইসরাইলি নিহত ও ২৫১ জন জিম্মি হন। এর প্রতিক্রিয়ায় ইসরাইল গাজায় ব্যাপক বিমান ও স্থল হামলা শুরু করে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, এই সংঘাতে এ পর্যন্ত ৫৬ হাজার ২৫৯ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন এক লাখ ৩২ হাজার ৪৫৮ জন।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এই মানবিক বিপর্যয় থেকে উত্তরণের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অবিলম্বে কার্যকর ভূমিকা গ্রহণ করা প্রয়োজন।

মতামত দিন