গাজায় ত্রাণ কেন্দ্রে ইসরায়েলী হামলায় শিশুসহ নিহত ২৩
আন্তর্জাতিক ডেস্ক ॥ গাজা উপত্যকার মধ্যাঞ্চলে আবারও ভয়াবহ রক্তপাত ঘটিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। শনিবার (১৪ জুন) সকালে একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে জড়ো হওয়া সাধারণ মানুষের ওপর আচমকা চালানো গুলি ও বিমান হামলায় অন্তত ২৩ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতদের অধিকাংশই ছিলেন খাদ্যের আশায় লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা নিরস্ত্র বেসামরিক মানুষ। এ হামলায় আহত হয়েছেন আরও অনেকে। তাদের মধ্যে অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক।প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্যমতে, কোনো ধরনের পূর্বসতর্কতা ছাড়াই ইসরায়েলি সেনারা বেসামরিকদের লক্ষ্য করে গুলি চালায় এবং পরে সেখানে বিমান হামলা চালানো হয়। হতাহতদের দ্রুত স্থানীয় আল-আওদা ও আল-আকসা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসকদের বরাতে আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, নিহতদের অধিকাংশের মৃত্যু হয়েছে গুলির আঘাত ও বোমার স্প্লিন্টারের কারণে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত কিছুদিনে ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রগুলোতে এ ধরনের হামলায় এখন পর্যন্ত ২৭৪ জন নিহত এবং ২ হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। শিশু ও নারী নিহতের হার উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ছে। স্থানীয় মানবাধিকার সংস্থাগুলোর দাবি, ইসরায়েলি আগ্রাসনে এ পর্যন্ত গাজায় ৫৫ হাজারেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন।
গাজা এখন এক ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ের মুখোমুখি। লাখ লাখ মানুষ ঘরবাড়ি হারিয়ে খোলা আকাশের নিচে আশ্রয় নিয়েছেন। খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি, ওষুধ ও চিকিৎসার অভাবে হাজার হাজার শিশু অপুষ্টিতে ভুগছে। নিরাপদ আশ্রয় ও ন্যূনতম সেবাও তাদের জন্য অনুপলব্ধ।
এ হামলার পর আন্তর্জাতিক মহল উদ্বেগ প্রকাশ করলেও কার্যকর কোনো হস্তক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না। মানবাধিকার সংস্থাগুলো একে যুদ্ধাপরাধ হিসেবে বিবেচনা করছে এবং আন্তর্জাতিক আদালতে বিচার দাবি ক্রমশ জোরালো হচ্ছে।
অন্যদিকে, ইসরায়েল এই হামলার দায় অস্বীকার করে বলেছে, তাদের লক্ষ্য ছিল সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর ঘাঁটি। তবে নিরপেক্ষ তদন্ত ছাড়া প্রকৃত সত্য জানা সম্ভব নয় বলে মত দিয়েছেন বিশ্লেষকরা।
এই হামলা আরও একবার প্রমাণ করেছে, গাজার প্রতিটি দিন যেন নিরীহ মানুষের জন্য মৃত্যু ও ধ্বংসের আরেকটি নতুন গল্প।
মতামত দিন