আন্তর্জাতিক

ইরান পারমাণবিক অস্ত্রে সক্ষম, দাবি মার্কিন গোয়েন্দা প্রধানের

আন্তর্জাতিক ডেস্ক ॥ মার্কিন জাতীয় গোয়েন্দা প্রধান তুলসি গ্যাবার্ডের সাম্প্রতিক মন্তব্য আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে ব্যাপক আলোড়ন তুলেছে। তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের কাছে এমন গোয়েন্দা তথ্য রয়েছে, যা থেকে ধারণা করা যায়—ইরান চাইলে মাত্র কয়েক সপ্তাহের মধ্যে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে সক্ষম। এই বক্তব্য এমন সময় এসেছে, যখন যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে পারমাণবিক ইস্যুতে উত্তেজনা বেড়েই চলেছে।

তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই মন্তব্যকে প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন, গ্যাবার্ড ইরান সম্পর্কে ভুল তথ্য ছড়াচ্ছেন। ট্রাম্প পরপর দুইবার তার বক্তব্যে এই অভিযোগ তোলেন এবং গ্যাবার্ডের সততা ও উদ্দেশ্য নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। এর ফলে আমেরিকার অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক অঙ্গনে এই ইস্যু ঘিরে নতুন করে বিতর্ক তৈরি হয়েছে।

ইরান তাদের পারমাণবিক কর্মসূচিকে বরাবরই শান্তিপূর্ণ ও বেসামরিক বলে দাবি করে আসছে। তারা জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রম পরিচালনা করছে এবং আন্তর্জাতিক পরিদর্শকদের প্রবেশাধিকার দিয়েছে। তেহরানের মতে, এটি তাদের সার্বভৌম অধিকার এবং কোনোভাবেই তারা পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির পথে হাঁটছে না।

গত মার্চে একটি সিনেট কমিটির শুনানিতে গ্যাবার্ড অভিযোগ করেন, তার বক্তব্য গণমাধ্যম ভুলভাবে উপস্থাপন করছে। তিনি দাবি করেন, মার্কিন গোয়েন্দারা বিশ্বাস করেন না যে ইরান বর্তমানে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করছে। গ্যাবার্ডের এমন অবস্থান অনেক কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞের প্রশংসা কুড়িয়েছে। কারণ তিনি কূটনৈতিক সমাধান এবং শক্তির পরিবর্তে সংলাপের ওপর জোর দিচ্ছেন।

তবে ট্রাম্প প্রশাসন ও ইসরায়েল বরাবরই ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির বিরোধিতা করে আসছে। তারা মনে করে, ইরানের এই সক্ষমতা ভবিষ্যতে অস্ত্র তৈরিতে রূপান্তরিত হতে পারে, যা মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে অস্ত্র প্রতিযোগিতা ও অস্থিরতার জন্ম দেবে। এই মতপার্থক্য এখন শুধু আমেরিকার অভ্যন্তরীণ রাজনীতির ক্ষেত্রেই নয়, বরং বৈশ্বিক নিরাপত্তা ও কূটনীতির ক্ষেত্রেও নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে।

বিশ্ব সম্প্রদায় এ মুহূর্তে ইরানকে তার আন্তর্জাতিক প্রতিশ্রুতি মেনে চলার জন্য চাপ দিচ্ছে। তুলসি গ্যাবার্ডের বক্তব্য এই বিতর্কে নতুন মাত্রা যোগ করেছে, যা আগামীদিনে আমেরিকার পররাষ্ট্রনীতি এবং মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতিতে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে।

মতামত দিন