ইরান-ইসরায়েল উত্তাপে সতর্ক তুরস্ক, সীমান্তে টহল
আন্তর্জাতিক ডেস্ক ॥ মধ্যপ্রাচ্যে ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনা যখন চরমে, তখন এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে আশেপাশের দেশগুলোর উপরেও। এই সংকটজনক পরিস্থিতিতে তুরস্ক তার সীমান্ত নিরাপত্তা জোরদার করেছে এবং সম্ভাব্য যুদ্ধে জড়িত হওয়ার ঝুঁকি বিবেচনায় প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ঢেলে সাজাচ্ছে। রয়টার্সের বরাতে জানা গেছে, তুরস্কের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় একটি গোপন সূত্রে নিশ্চিত করেছে, ইরান সীমান্ত এলাকায় উন্নত রাডার সিস্টেম, ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এবং যুদ্ধবিমান প্রস্তুতির কাজ শুরু হয়েছে।সূত্র মতে, ইসরায়েলের হামলার সময় তুরস্কের ফাস্ট-রেসপন্স ফাইটার জেটগুলো আকাশসীমায় টহল দিয়েছে যাতে সীমান্ত লঙ্ঘনের যেকোনো চেষ্টা সাথে সাথে প্রতিহত করা যায়। যদিও এখনো পর্যন্ত ইরান থেকে তুরস্কে উল্লেখযোগ্য শরণার্থী প্রবাহ দেখা যায়নি, তবুও আগাম সতর্কতার অংশ হিসেবে সীমান্তে অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন ও নজরদারি ব্যবস্থা কার্যকর করা হয়েছে।
তুরস্ক সরকার সরাসরি এই যুদ্ধে জড়ায়নি। তবে আঙ্কারা স্পষ্ট করেছে, মধ্যপ্রাচ্যে যেকোনো বড় সামরিক সংঘাত তাদের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা এবং অর্থনীতির উপর ভয়াবহ প্রভাব ফেলতে পারে। এ কারণেই প্রতিরক্ষা প্রস্তুতির পাশাপাশি কূটনৈতিক দিকেও গুরুত্ব দিচ্ছে তারা।
প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান এ পরিস্থিতিকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করছেন। তিনি ইরানের নতুন প্রেসিডেন্ট মাসউদ পেজেশকিয়ান, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে একাধিকবার ফোনে কথা বলেছেন। আলোচনায় তিনি যুদ্ধের পরিবর্তে শান্তিপূর্ণ সমাধান এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার উপর জোর দিয়েছেন।
তুরস্কের পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে, আঙ্কারা আঞ্চলিক উত্তেজনা হ্রাসে গঠনমূলক ভূমিকা রাখতে চায় এবং প্রয়োজন হলে মধ্যস্থতাকারী হিসেবেও এগিয়ে আসতে পারে। এই অবস্থান আন্তর্জাতিক পর্যায়েও ইতিবাচকভাবে প্রতিফলিত হচ্ছে।
বিশ্লেষকদের মতে, তুরস্কের এই কৌশলগত প্রস্তুতি শুধুমাত্র নিজ দেশের নিরাপত্তার স্বার্থেই নয়, বরং পুরো অঞ্চলের নিরাপত্তা ও কূটনৈতিক ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। যুদ্ধের আগুন না ছড়িয়ে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে তুরস্কের ভূমিকা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে একটি দৃষ্টান্ত হয়ে উঠতে পারে।
মতামত দিন