ইরানে মোসাদ সন্দেহে ৫৪ জন গ্রেপ্তার
আন্তর্জাতিক ডেস্ক ॥ ইসরায়েলের সঙ্গে চলমান উত্তেজনার মধ্যে ইরান বড় ধরনের নিরাপত্তা অভিযান চালিয়েছে। দেশটির দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় খুজেস্তান প্রদেশে মোসাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থাকার অভিযোগে ৫৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ইরানি নিরাপত্তা বাহিনী। খুজেস্তানের প্রসিকিউটর অফিস জানিয়েছে, গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে দেশবিরোধী তৎপরতা, রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত করা এবং বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থার হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ আনা হয়েছে।আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা আনাদোলু ও ইরানের ফার্স নিউজ নিশ্চিত করেছে, এই অভিযানে ধৃতরা ইসরায়েলের হয়ে কাজ করছিল এবং ইরানের বিরুদ্ধে ভুয়া তথ্য ও গুজব ছড়িয়ে রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরির চেষ্টা করছিল। প্রশাসন বলছে, এদের একটি সংগঠিত চক্র হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে যারা সাইবার মাধ্যমে গোপন তথ্য পাচার, সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট এবং সন্ত্রাসে অর্থায়নের সঙ্গে জড়িত ছিল।
সাম্প্রতিক সময়েই ইরান-ইসরায়েল সংঘাত তীব্র রূপ নিয়েছে। ইসরায়েল একাধিকবার ইরানের সামরিক ও পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে। জবাবে ইরানও ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন ব্যবহার করে ইসরায়েলের অভ্যন্তরে পাল্টা আঘাত হেনেছে। এ সংঘর্ষে ইসরায়েলের অন্তত ২৫ জন নাগরিক নিহত এবং শতাধিক আহত হয়েছেন বলে জানানো হয়েছে। অপরদিকে, ইরানের তথ্যমতে, ইসরায়েলি হামলায় তাদের ৬৩৯ জন নিহত এবং প্রায় ১,৩০০ জন আহত হয়েছে।
এই প্রেক্ষাপটে ইরানে এমন একটি বড়সড় গ্রেপ্তার অভিযান সংঘাতের অংশ হিসেবেই দেখা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ইরান সরকারের এ ধরনের পদক্ষেপ মূলত অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং সম্ভাব্য প্রতিহামলার প্রস্তুতির অংশ। একইসঙ্গে এটি দেশের ভেতরে ইসরায়েলি প্রভাব রোধেরও একটি বার্তা।
তবে আন্তর্জাতিক মহল ক্রমবর্ধমান সংঘাতে উদ্বেগ প্রকাশ করে উভয় পক্ষকে শান্ত থাকার আহ্বান জানাচ্ছে। জাতিসংঘ ও অন্যান্য মানবাধিকার সংস্থা মধ্যপ্রাচ্যের এই উত্তেজনাকে বৈশ্বিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি হিসেবে বিবেচনা করছে।
বর্তমানে পরিস্থিতি কোন দিকে যাবে তা বলা কঠিন। যদি এই সংঘর্ষ আরও বিস্তৃত হয়, তাহলে তা শুধু মধ্যপ্রাচ্য নয়, বরং বিশ্বব্যাপী নিরাপত্তা, জ্বালানি সরবরাহ ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার ওপরও বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। ফলে সবাই এই মুহূর্তে সংযম ও কূটনৈতিক সমাধানের দিকে নজর দিতে আহ্বান জানাচ্ছে।
মতামত দিন