আন্তর্জাতিক

ইরানের মিসাইল হামলায় নিহত ইসরায়েলীদের ছবি প্রকাশ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক ॥ গত ১৩ জুন ভোরে ইসরায়েল যখন ইরানের পরমাণু ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র স্থাপনাগুলোতে আগাম হামলা চালায়, তখন কেউ কল্পনাও করতে পারেনি যে এই আক্রমণের পাল্টা প্রতিক্রিয়া এত ভয়ঙ্কর হতে চলেছে। মাত্র ১২ দিনের মধ্যে ইরান প্রায় ৫৫০টি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র এবং এক হাজার ড্রোন পাঠিয়েছে ইসরায়েলের দিকে, যার ফলস্বরূপ দুই দেশই বিপুল প্রাণহানি ও ধ্বংসের মুখে পড়ে।

ইরানের পাল্টা হামলায় ২৮ জন ইসরায়েলি নাগরিক প্রাণ হারান, যাদের মধ্যে সবচেয়ে বয়স্ক ছিলেন ৯৫ বছর বয়সী একজন হোলোকাস্ট বেঁচে ফেরা ইহুদি। সবচেয়ে কম বয়সী ছিলেন ইউক্রেনীয় ৭ বছরের এক শিশু। যুদ্ধ যেনো জাতি, বয়স, ধর্ম কিছুই বুঝে না—এই বাস্তবতাই উঠে আসে এ ঘটনায়।

ইসরায়েল জানিয়েছে, আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা শত শত ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন প্রতিহত করলেও অন্তত ৩৬টি ক্ষেপণাস্ত্র জনবসতিতে আঘাত করে। এতে হাইফার একটি তেল শোধনাগার, একটি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং একাধিক অ্যাপার্টমেন্ট ভবন ধ্বংস হয়। আহত হয়েছেন ৩ হাজার ২৩৮ জনের বেশি মানুষ এবং ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় ২৪০টি ভবন। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, এখন পর্যন্ত ১৩ হাজারেরও বেশি মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছে।

অন্যদিকে, ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তাদের দেশে ৬১০ জন নিহত হয়েছেন এবং ৪ হাজার ৭৪৬ জন আহত। এই সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে।

বিশ্ব সম্প্রদায় এই সংঘাতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছে। তবে দুই পক্ষই এখনো পিছু হটার কোনো ইঙ্গিত দেয়নি। বিশ্লেষকরা বলছেন, এই ধরনের সংঘর্ষ দীর্ঘমেয়াদে মধ্যপ্রাচ্যের নিরাপত্তা ও বৈশ্বিক রাজনীতিতে গভীর প্রভাব ফেলতে পারে।

বেসামরিক প্রাণহানি ও মানবিক বিপর্যয়ের এই পর্ব বিশ্ববাসীকে আবারও স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে—শান্তির কোনও বিকল্প নেই। তবে যুদ্ধবাজ মনোভাব থামাতে না পারলে, সামনে আরও অন্ধকার সময় অপেক্ষা করছে।

মতামত দিন