অন্যান্য

‘চিকেন নেক’ সংলগ্ন বিমানবন্দর নিয়ে উদ্বিগ্ন ভারত, চীনের ছায়া সন্দেহ

ডেস্ক রিপোর্ট ॥ দীর্ঘদিন পর বন্ধ থাকা লালমনিরহাট বিমানবন্দর পুনরায় চালু করতে উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। এই পদক্ষেপকে একান্তই অভ্যন্তরীণ এবং দেশের স্বার্থে নেওয়া হয়েছে বলে জানালেও প্রতিবেশী দেশ ভারত এতে কৌশলগত উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ভারতের আশঙ্কা, এই উদ্যোগের পেছনে চীনের সক্রিয় ভূমিকা থাকতে পারে, যা তাদের নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে উঠতে পারে।

সোমবার বাংলাদেশ সেনাসদরের মিলিটারি অপারেশন্স অধিদপ্তরের ব্রিফিংয়ে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজিম-উদ-দৌলা বলেন, “লালমনিরহাট বিমানবন্দরটি দীর্ঘদিন ধরে পরিত্যক্ত ছিল। এখন সেটিকে আধুনিকায়ন করে দেশের অভ্যন্তরীণ প্রয়োজনে ব্যবহার করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।” তিনি আরও জানান, এতে কোনো চীনা সহযোগিতা বা সামরিক সম্পৃক্ততার বিষয়ে সেনাবাহিনীর কাছে নিশ্চিত কোনো তথ্য নেই।

তবে ভারতের শীর্ষস্থানীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এক প্রতিবেদনে দাবি করেছে, এই বিমানবন্দরটি চীনের সহায়তায় পুনরায় চালু করা হচ্ছে এবং ভবিষ্যতে এটি চীনা সামরিক কার্যক্রমের অংশ হতে পারে। কারণ, লালমনিরহাটের অবস্থান ভারতের ‘চিকেন নেক’ করিডোরের খুব কাছাকাছি। এটি ভারতের মূল ভূখণ্ড ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মধ্যে সংযোগকারী একটি কৌশলগত অঞ্চল। ফলে ভারতের নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের মধ্যে এই উদ্যোগ ঘিরে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।

প্রতিবেদনটিতে আরও বলা হয়, লালমনিরহাট বিমানবন্দর ব্যবহারের মাধ্যমে চীনের যুদ্ধবিমান, রাডার কিংবা সামরিক যন্ত্রপাতি স্থাপনের সুযোগ তৈরি হতে পারে। এই আশঙ্কা থেকে ভারতও পাল্টা পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছে। ত্রিপুরার কৈলাশহর এলাকায় একটি পুরনো বিমানঘাঁটি পুনরায় চালুর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। ভারতীয় একটি প্রতিনিধি দল সেখানে পরিদর্শনও করেছে এবং রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনা করছে বিমানঘাঁটিটি সামরিক ও বেসামরিক উভয় উদ্দেশ্যে ব্যবহারের উপযোগী করে গড়ে তোলার বিষয়ে।

এনডিটিভির প্রতিবেদনে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটও তুলে ধরা হয়। সেখানে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার চীন ও পাকিস্তানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ার নীতিতে আগ্রহী, যা ভারতকে উদ্বিগ্ন করে তুলেছে।

এই পরিস্থিতিতে লালমনিরহাট বিমানবন্দর শুধু একটি অবকাঠামো নয়, বরং এটি দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনীতিতে একটি নতুন উত্তেজনার সূচনা করেছে। এখন দেখার বিষয়, বাংলাদেশ কীভাবে এই সংকটপূর্ণ পরিস্থিতিতে ভারসাম্য রক্ষা করে।

মতামত দিন