বাংলাদেশে জনপ্রশাসন, পুলিশ এবং পররাষ্ট্র ক্যাডারের কর্মকর্তাদের নিয়োগ, বদলি ও শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিষয়ে পরামর্শ দিতে তিনটি আলাদা উচ্চ পর্যায়ের উপদেষ্টা কমিটি গঠন করা হয়েছে। এসব কমিটি, এখন থেকে সংশ্লিষ্ট ক্যাডারের কর্মকর্তাদের নিয়োগ ও বদলির ক্ষেত্রে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের কাছে পরামর্শ দিতে হবে।

প্রজ্ঞাপন এবং গঠন করা কমিটিগুলি: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে গত ৯ জানুয়ারি তিনটি আলাদা প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়, যার মাধ্যমে এই তিনটি কমিটি গঠন করা হয়। এগুলি হল:
১. জনপ্রশাসন বিষয়ক কমিটি
২. আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক কমিটি
৩. পররাষ্ট্র বিষয়ক কমিটি

জনপ্রশাসন বিষয়ক কমিটি
এ কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন অর্থ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। অন্যান্য সদস্যরা হলেন: বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান, পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও জনপ্রশাসন সচিব। কমিটির সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম। এই কমিটি জনপ্রশাসনে বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক (ডিসি), যুগ্ম সচিব ও তাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিয়োগ, বদলি ও শৃঙ্খলা বিষয়ে পরামর্শ দেবে।

আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক কমিটি
এই কমিটির সভাপতি হচ্ছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। অন্যান্য সদস্যরা হলেন: আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মো. খোদা বখস চৌধুরী, স্বরাষ্ট্র সচিব ও পুলিশের মহাপরিদর্শক। কমিটির সদস্য সচিব হচ্ছেন নৌ পরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন। এই কমিটি জেলা পুলিশের এসপি, ডিআইজি ও তদূর্ধ্ব স্তরের কর্মকর্তাদের নিয়োগ, বদলি ও শৃঙ্খলা বিষয়ে পরামর্শ দেবে।

পররাষ্ট্র বিষয়ক কমিটি
এই কমিটি গঠন করা হয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক ও সমপর্যায়ের কর্মকর্তাদের নিয়োগ, বদলি এবং শৃঙ্খলা বিষয়ে পরামর্শের জন্য। কমিটির সভাপতি করা হয়েছে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। অন্যান্য সদস্যরা হলেন শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, প্রধান উপদেষ্টার রোহিঙ্গা সমস্যা সংক্রান্ত বিশেষ প্রতিনিধি খলিলুর রহমান, এবং পররাষ্ট্র সচিব। কমিটির সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে সংযুক্ত উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম।

এই তিনটি কমিটি গঠন করা হয়েছে প্রধানত প্রশাসন, পুলিশ এবং পররাষ্ট্র ক্যাডারের কর্মকর্তাদের তদবির ঠেকানোর জন্য। এখন থেকে এসব কর্মকর্তাদের নিয়োগ ও বদলির আগে এসব কমিটির পরামর্শ নিতে হবে। তবে, কিছু কর্মকর্তারা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যে, কমিটি গঠনের কারণে নিয়োগ এবং বদলির প্রক্রিয়া ধীর হতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *