ডেস্ক রিপোর্ট ॥ ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর নয় মাসের মুক্তিযুদ্ধ শেষে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মসমর্পণ করে। ঢাকার রমনা রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) বিকেলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে আত্মসমর্পণের দলিলে সই করেন পাকিস্তানের পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আমির আবদুল্লাহ খান নিয়াজি এবং মিত্রবাহিনীর পক্ষে ভারতের লেফটেন্যান্ট জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরা।
তবে মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সর্বাধিনায়ক মুহাম্মদ আতাউল গণি ওসমানীর অনুপস্থিতি নিয়ে সেই সময় থেকেই বিতর্ক সৃষ্টি হয়, যা আজও থেমে নেই। এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্প্রতি ‘ইতিহাসের ঘটনা’ শিরোনামে একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘‘দীর্ঘ সংগ্রাম ও নয় মাসব্যাপী নৃশংস যুদ্ধের মধ্য দিয়ে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ একটি সার্বভৌম স্বাধীন দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।’’
ভারতের সাবেক পররাষ্ট্র সচিব জে এন দীক্ষিত তার বই ‘লিবারেশন অ্যান্ড বিয়ন্ড: ইন্দো-বাংলাদেশ রিলেশনস’-এ এ প্রসঙ্গে উল্লেখ করেন, ‘‘আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের কমান্ডার জেনারেল এম এ জি ওসমানীর উপস্থিতি নিশ্চিত না করা একটি বড় রাজনৈতিক ভুল ছিল। আনুষ্ঠানিকভাবে বলা হয়, ওসমানীর হেলিকপ্টার সময়মতো ঢাকায় পৌঁছাতে পারেনি। তবে অনেকের সন্দেহ, তার উপস্থিতি ইচ্ছাকৃতভাবে এড়ানো হয়েছে এবং পুরো অনুষ্ঠানটি ভারতীয় সামরিক কমান্ডারদের কেন্দ্র করে রাখা হয়েছে।’’
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে অসন্তোষ সৃষ্টি হয় এবং বিজয়ের প্রাথমিক সময়গুলোতে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক কিছুটা প্রভাবিত হয়। জে এন দীক্ষিতের মতে, ‘‘যদি ওসমানী ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতেন, তবে তা রাজনৈতিক ভুল বোঝাবুঝি দূর করতে সহায়ক হতো।’’
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিবৃতির শেষে বলেছে, ‘‘১৯৭১ সালের গৌরবময় বিজয় উদযাপন করতে গিয়ে আমরা সত্যকে উদযাপন করি।’’