টাঙ্গাইল প্রতিনিধি ॥ টাঙ্গাইলের গোপালপুরে বিলুপ্তপ্রায় বাংলা জাতের একটি শকুন উদ্ধার করা হয়েছে। স্থানীয় এলাকাবাসীর সহায়তায় বন বিভাগে কর্মকর্তারা শকুনটিকে উদ্ধার করেন। সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) বিকেলে উপজেলার ঝাওয়াইল ইউনিয়নের মোহাইল গ্রামে অসুস্থ অবস্থায় শকুনটি পাওয়া যায়। শকুনটির ওজন প্রায় ১৫ কেজি এবং ডানা মেললে লম্বায় প্রায় ১০ ফুট।

স্থানীয়দের সূত্রে জানা যায়, মোহাইল গ্রামের কয়েকজন কিশোর বিলে মাছ ধরতে গেলে হঠাৎ পড়ে থাকা অবস্থায় শকুনটিকে দেখতে পান। তারা শকুনটিকে উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে আসেন। পরদিন সকালে স্থানীয় ৩ নং ঝাওয়াইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান তালুকদারকে বিষয়টি জানালে তিনি তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে যান।

চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান তালুকদার জানান, “শকুনটি অসুস্থ ও ক্ষুধার্ত ছিল। আমি স্থানীয়দের সহযোগিতায় শকুনটির জন্য কিছু গোস্ত কিনে খাওয়ানোর ব্যবস্থা করি এবং বিষয়টি গোপালপুরের ইউএনও মহোদয়কে অবগত করি। পরে বন বিভাগের কর্মকর্তারা শকুনটিকে হেফাজতে নেন।”

এদিকে গোপালপুর উপজেলা বন বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম জানান, সংবাদ পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে যান এবং স্থানীয়দের কাছ থেকে শকুনটিকে উদ্ধার করেন। তিনি আরও বলেন, “এটি একটি বিরল বাংলা জাতের শকুন। বর্তমানে শকুনটির শারীরিক অবস্থা বিবেচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”

গোপালপুর প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, “মোবাইল ফোনে সংবাদ পেয়ে আমি দ্রুত ইউএনও মহোদয় এবং বন বিভাগের কর্মকর্তাকে অবগত করি। পরে শকুনটি উদ্ধার করে উপজেলা কমপ্লেক্সে আনা হয় এবং চিকিৎসা শেষে বন বিভাগের হেফাজতে দেওয়া হয়।”

এদিকে, বিরল এই শকুনটিকে একনজর দেখতে মোহাইল গ্রামে ভিড় জমাচ্ছে উৎসুক জনতা। অনেকেই মোবাইলে শকুনটির ছবি তুলে রাখছেন।

গোপালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম আশরাফ শামীম ঘটনাটি নিশ্চিত করে বলেন, শকুনটি বর্তমানে নিরাপদে বন বিভাগের হেফাজতে রয়েছে।

উল্লেখ্য, বিলুপ্তপ্রায় এই বাংলা জাতের শকুন বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনে একটি গুরুত্বপূর্ণ ও সুরক্ষিত প্রাণী হিসেবে বিবেচিত। শকুনের সংখ্যা দিন দিন কমে যাওয়ায় এটি সংরক্ষণের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *