ডেস্ক রিপোর্ট ॥ ভারতের বাণিজ্য ঘাটতি রেকর্ড মাত্রায় বেড়ে যাওয়ার কারণে দেশটির মুদ্রা রুপি, সংযুক্ত আরব আমিরাতের দিরহামের বিপরীতে ইতিহাসের সর্বনিম্ন পর্যায়ে পৌঁছেছে। মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) এক রুপির মূল্য ২৩ দশমিক ১৪ দিরহাম এবং মার্কিন ডলারের বিপরীতে ৮৪ দশমিক ৯২ রুপিতে নেমে গেছে, যা ভারতের মুদ্রাবাজারে একটি বড় পতন বলে মনে করা হচ্ছে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত তথ্যে দেখা গেছে, ভারতের বাণিজ্য ঘাটতি সঙ্কটজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষত, দেশটির স্বর্ণ আমদানির রেকর্ড বৃদ্ধি এবং রপ্তানির পরিমাণ হ্রাস পাওয়ায় এই ঘাটতি বৃদ্ধি পেয়েছে। ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন যে, ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক (আরবিআই) সম্ভবত রুপির মান স্থিতিশীল রাখতে সরাসরি হস্তক্ষেপ করেছে। তারা সাধারণত নির্দিষ্ট স্তরে এসে মুদ্রার দর বজায় রাখে, তবে পরিস্থিতি বর্তমানে এতটাই খারাপ যে, রুপি শিগগিরই আগের অবস্থায় ফিরে আসবে এমন সম্ভাবনা কম।
ভারতের অর্থনীতিতে অস্থিরতা এবং মুদ্রার দরপতনের পেছনে একাধিক কারণ রয়েছে। চলতি মাসের শুরুতে রুপি ইতিহাসের সর্বনিম্ন মানে পৌঁছায়, ৩ ডিসেম্বর এক ডলারের বিপরীতে রুপি ছিল ৮৪ দশমিক ৭৫। এর প্রধান কারণ ছিল ভারতের সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাসের তুলনায় কম হওয়া। ২০২৩ সালের জুলাই-সেপ্টেম্বর ত্রৈমাসিকে ভারতের অর্থনীতি ৫.৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছিল, যা গত ১৮ মাসে সবচেয়ে কম।
আরেকটি কারণ হিসেবে মার্কিন ডলারের শক্তিশালী অবস্থান এবং ইউরোপীয় অঞ্চলের রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা রুপির মূল্য হ্রাসের পেছনে অন্যতম ভূমিকা রেখেছে। ২০২০ সালে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মন্তব্যও রুপি দুর্বল হওয়ার কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল। তিনি বলেছিলেন যে, ব্রিকস দেশগুলোকে ডলারের পরিবর্তে অন্য কোনো মুদ্রা ব্যবহার না করার প্রতিশ্রুতি দিতে হবে, না হলে তাদের ওপর ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে।
বর্তমানে ভারতীয় মুদ্রার বাজারে ব্যাপক অস্থিরতা বিরাজ করছে, এবং রুপি সাম্প্রতিক ইতিহাসে বেশ কিছুবার দরপতন ঘটেছে।