মৌলভীবাজার প্রতিনিধি ॥ বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক এমপি এম নাসের রহমান শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) মৌলভীবাজার পৌরসভা প্রাঙ্গনে আয়োজিত বিএনপির কর্মী সমাবেশে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ করেছেন। তিনি দাবি করেন, শেখ হাসিনা বাংলাদেশের রাজনৈতিক নেতা নন, বরং ভারত তার এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য শেখ হাসিনাকে ব্যবহার করেছে।
নাসের রহমান বলেন, “শেখ হাসিনাকে ভারত ফ্লাট করে তাদের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে বলেছিল এবং তিনি ভারতের নির্দেশে যা যা দরকার ছিল, তা দিয়েছিলেন।” তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনা নিজেই স্বীকার করেছেন, “আমি যা ভারতকে দিয়েছি, ভারত কখনো ভুলতে পারবে না।” তার এই বক্তব্যকে দেশের একজন দেশপ্রেমিক রাজনীতিবিদের আচরণ হিসেবে দেখেন না তিনি।
নাসের রহমান বলেন, “শেখ হাসিনা যখন ভারতের ইশারায় কাজ করেছে, তখন তার মূল লক্ষ্য ছিল দেশের তত্ববধায়ক ব্যবস্থা বাতিল করা। কারণ তার ভয় ছিল, তত্ববধায়ক সরকার থাকলে আওয়ামী লীগ আর ক্ষমতায় আসতে পারবে না।” তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনা ১৯৯৪ থেকে ১৯৯৬ সালের মধ্যে সারাদেশে ১৬৪ দিন হরতাল ও অবরোধ করে লাখো কোটি টাকার ক্ষতি সাধন করেছিলেন, কিন্তু ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য এসব করেছেন।
নাসের রহমান তার বক্তব্যে আরও বলেন, শেখ হাসিনা একাধিকবার দেশের বাইরে পালিয়েছেন, যার মধ্যে ১৯৮১ সালে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের হত্যাকাণ্ডের পর আখাউড়া বর্ডার দিয়ে তিনি ভারতে পালিয়ে গিয়েছিলেন। এছাড়া ওয়ান ইলেভেনেও তিনি বিদেশে চলে গিয়েছিলেন। তিনি বলেন, ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা ছাত্র জনতার অভ্যূত্থানের ভয়ে দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে গিয়েছিলেন।
তিনি বিএনপির নেতাদের সমর্থন দিয়ে বলেন, “আজ বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ গণহত্যাকারী দল হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। আওয়ামী লীগ কখনও জনগণের দল ছিল না, তারা ছিল পুলিশের, প্রশাসনের এবং আদালতের দল।”
তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে আওয়ামী লীগের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, “বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হলেও আওয়ামী লীগ তখন দেশপ্রেমিক নেতাদের জন্য প্রেক্ষাপট তৈরি করতে পারেনি।” তিনি প্রশ্ন তোলেন, “আওয়ামী লীগের মধ্যে কোনো বীর উত্তম, বীর বিক্রম বা বীর প্রতীক আছেন?”
নাসের রহমান বলেন, ২০২৫ সালে বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন অধ্যায়ের সূচনা হবে, যেখানে আওয়ামী লীগকে জনগণ গণহত্যাকারী দল হিসেবে চিহ্নিত করবে এবং তাদের রাজনৈতিক অস্তিত্ব থাকবে না।
তিনি আরও বলেন, “বিএনপি আগামী দিনে বাংলাদেশে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করবে এবং আওয়ামী লীগকে তাদের অপকর্মের জন্য দায়ী করবে।”