ডেস্ক রিপোর্ট ॥ ২০২৩ সালের মার্কিন সন্ত্রাসবাদ প্রতিবেদনে বাংলাদেশে সন্ত্রাসবাদের পরিস্থিতি, রাজনৈতিক ব্যবস্থাপনা, এবং মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে উল্লেখযোগ্য পর্যবেক্ষণ উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালে বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী সহিংসতার কোনো ঘটনা ঘটেনি। তবে সরকার রাজনৈতিক বিরোধীদের দমন করতে ‘সন্ত্রাসবাদ’ এবং ‘জঙ্গিবাদ’কে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, সরকারের নিরাপত্তা বাহিনী বিরোধী দলের নেতাদের সন্ত্রাসবাদের অভিযোগে গ্রেপ্তার করেছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিরুদ্ধে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগও উঠে এসেছে। বিশেষ করে ছাত্র-জনতার আন্দোলন এবং বিরোধী দলের প্রতিবাদগুলোকে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড হিসেবে আখ্যা দেওয়ার বিষয়টি উল্লেখযোগ্য।
তবে সন্ত্রাস দমনে সরকারের কিছু সাফল্যের কথাও প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। ২০২৩ সালে বাংলাদেশে আল-কায়েদা, আনসারুল্লাহ বাংলা টিম (আনসার আল-ইসলাম), এবং আইএসআইএস-সংশ্লিষ্ট সংগঠন নিউ-জামায়াত-উল-মুজাহিদিন বাংলাদেশ (নব্য-জেএমবি)-এর কার্যক্রম দমন করা হয়েছে। মার্কিন প্রশিক্ষিত বাংলাদেশ পুলিশের বিশেষ ইউনিট একাধিক সন্দেহভাজন সন্ত্রাসীকে আটক করেছে।
প্রতিবেদনে পার্বত্য চট্টগ্রামে জাতিগত বিচ্ছিন্নতাবাদী কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ)-এর হামলার ঘটনাও স্থান পেয়েছে। মে মাসে কেএনএফের হামলায় দুই সেনা নিহত হন এবং মার্চে আরেক সেনা সদস্য মারা যান। এছাড়া কেএনএফের বিরুদ্ধে আল-কায়েদা থেকে অনুপ্রাণিত জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া (জেএএইচএস) নামে একটি সংগঠনকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। সরকার জানিয়েছে, ২০২৩ সালের শুরুর দিকে এই সংগঠনের কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণে আনা হয় এবং জুলাই মাসে সংগঠনের কথিত আমিরকে গ্রেপ্তার করা হয়।
প্রতিবেদনে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সংশোধন নিয়ে সমালোচনা করা হয়েছে। নতুন ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন’ প্রণয়ন করা হলেও এটি মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ন্ত্রণ এবং গ্রেপ্তারকে সহজতর করার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে বলে অভিযোগ তোলা হয়েছে।
বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে নিরাপত্তা সহযোগিতার বিষয়টিও প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং বিচারকদের প্রশিক্ষণ দিয়েছে এবং বিমানবন্দরের নিরাপত্তা উন্নয়নেও সহায়তা করেছে।