ডেস্ক রিপোর্ট ॥ বাংলা কবিতার অমর কবি হেলাল হাফিজ আর নেই। শুক্রবার শাহবাগের সুপার হোম হোস্টেলে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। জানা যায়, হোস্টেলের ওয়াশরুমে পড়ে গিয়ে মাথায় আঘাত পান তিনি। পরে বেলা ২টার দিকে তাকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। মৃত্যুর পর কবির মরদেহ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে রাখা হয়েছে।
দীর্ঘদিন ধরেই গ্লুকোমা, কিডনি জটিলতা, ডায়াবেটিস এবং স্নায়ু রোগে ভুগছিলেন কবি। তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কবি ও সাংবাদিক হাসান হাফিজ।
১৯৪৮ সালের ৭ অক্টোবর নেত্রকোণায় জন্ম নেওয়া হেলাল হাফিজ ছাত্রজীবন থেকেই কবিতা রচনায় আত্মনিয়োগ করেন। ১৯৬৫ সালে নেত্রকোণা দত্ত হাইস্কুল থেকে এসএসসি এবং ১৯৬৭ সালে নেত্রকোণা কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করার পর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন।
১৯৭২ সালে তিনি সাংবাদিকতা পেশায় যোগ দেন এবং দৈনিক পূর্বদেশ ও দৈনিক দেশ পত্রিকার সাহিত্য সম্পাদক হিসেবে কাজ করেন। তার সর্বশেষ কর্মস্থল ছিল দৈনিক যুগান্তর।
১৯৮৬ সালে প্রকাশিত তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘যে জ্বলে আগুন জ্বলে’ তাকে ব্যাপক জনপ্রিয়তা এনে দেয়। বইটির ৩৩টির বেশি সংস্করণ প্রকাশিত হয়েছে। দীর্ঘ ২৬ বছর পর ২০১২ সালে প্রকাশিত হয় তার দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ ‘কবিতা একাত্তর’।
তার কবিতায় প্রেম ও দ্রোহের এক অনন্য মিশ্রণ পাওয়া যায়। ‘নিষিদ্ধ সম্পাদকীয়’ কবিতার লাইনগুলো এখনো প্রেরণা জোগায়— ‘এখন যৌবন যার মিছিলে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়, এখন যৌবন যার যুদ্ধে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়।’
কবিতা রচনার জন্য তিনি ২০১৩ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার লাভ করেন। এছাড়া খালেকদাদ চৌধুরী পুরস্কারসহ বহু সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন।
হেলাল হাফিজের মৃত্যুতে বাংলা সাহিত্য হারালো এক কালজয়ী কবিকে। তার অমর রচনাগুলো প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে বেঁচে থাকবে।