ডেস্ক রিপোর্ট ॥ আন্তর্জাতিক বাজারে কফির দাম রেকর্ড পরিমাণ বেড়েছে। এর প্রভাব শিগগিরই ভোক্তা পর্যায়ে পৌঁছাতে পারে। অ্যারাবিকা কফি বিনের দাম বর্তমানে প্রতি পাউন্ড ৩.৪৪ ডলারে উঠেছে, যা গত বছরের তুলনায় ৮০ শতাংশ বেশি। অন্যদিকে রোবাস্টা বিনের দামেও নতুন রেকর্ড তৈরি হয়েছে।

বিশ্বের দুই প্রধান কফি উৎপাদনকারী দেশ ব্রাজিল ও ভিয়েতনামে খারাপ আবহাওয়ার কারণে কফি উৎপাদনে বড় ধাক্কা লেগেছে। ব্রাজিলে খরা ও তুষারঝড় এবং ভিয়েতনামে অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত কফির উৎপাদন কমিয়ে দিয়েছে।

বিশ্বের বৃহত্তম কফি উৎপাদনকারী ব্রাজিল এ বছর চরম খরার মুখোমুখি হয়েছে। খরার পর ভারী বৃষ্টির কারণে কফিগাছের ফুল ফোটার পর্যায়ে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। একইভাবে ভিয়েতনামের অতিরিক্ত বৃষ্টি ও চরম আবহাওয়ার প্রভাবে রোবাস্টা বিনের সরবরাহও সংকুচিত হতে পারে।

বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, বড় কফি ব্র্যান্ডগুলো ২০২৫ সালের প্রথম প্রান্তিকে কফির দাম বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে। ইতোমধ্যে জেডিই পিটস, নেস্‌লে, এবং লাভাজ্জা’র মতো কোম্পানিগুলো কাঁচামালের উচ্চ মূল্যের চাপ সামাল দিতে ব্যবসায়িক কৌশল পরিবর্তন করছে। এতে পণ্যদামের সঙ্গে মোড়কের আকারেও পরিবর্তন আসতে পারে।

ইতালির জনপ্রিয় কফি কোম্পানি লাভাজ্জা জানিয়েছে, “কাঁচামালের অতিরিক্ত ব্যয় বহন করা আর সম্ভব হচ্ছে না, দাম বাড়ানো ছাড়া কোনো বিকল্প নেই।” একই মন্তব্য করেছেন নেস্‌লের কফি ব্র্যান্ড প্রধান ডেভিড রেনি।

বিশ্বের অন্যতম প্রধান পণ্য কফি বর্তমানে দ্বিতীয় সর্বাধিক বেচাকেনা হওয়া পণ্য, যা শুধুমাত্র অপরিশোধিত তেলের পরেই অবস্থান করছে। কফির চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। চীনের মতো দেশগুলোতে গত এক দশকে কফি সেবনের পরিমাণ দ্বিগুণেরও বেশি বেড়েছে।

স্যাক্সো ব্যাংকের কৌশল বিভাগের প্রধান ওলে হ্যানসেন বলেছেন, কফির দাম বাড়ার পেছনে ২০২৫ সালের ব্রাজিলের উৎপাদন নিয়ে উদ্বেগ কাজ করছে। একইসঙ্গে ২০২৩ সালের ভয়াবহ খরা এবং অতিরিক্ত বৃষ্টি এর জন্য দায়ী।

কফি বিশ্লেষক ফেরান্দা ওকাডা জানিয়েছেন, সরবরাহ কম থাকায় এবং মজুত সংকুচিত হওয়ায় এই মূল্যবৃদ্ধির প্রবণতা কিছুদিন ধরে চলতে পারে। কফির বাজার পরিস্থিতি অস্থির থাকায় গ্রাহকদের সামনের দিনগুলোতে কফির জন্য বাড়তি ব্যয় মেনে নিতে হতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *