ডেস্ক রিপোর্ট ॥ ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী বলেছেন, যেকোনো ঘটনায় পুলিশকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। থানায় অভিযোগ বা জিডি হলে ১ ঘণ্টার মধ্যে ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রাথমিক অনুসন্ধান ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। তিনি বলেন, এমন পদক্ষেপ পুলিশ সম্পর্কে জনগণের ইতিবাচক ধারণা তৈরি করবে। বুধবার (১১ ডিসেম্বর) রাজারবাগ পুলিশ অডিটোরিয়ামে ডিএমপির নভেম্বর মাসিক অপরাধ পর্যালোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি উল্লেখ করেন, ঢাকা শহরে প্রায় ২ কোটি মানুষের বসবাস। যানজটসহ নানাবিধ সমস্যায় জর্জরিত এ শহরে পুলিশের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। জুলাই-আগস্ট মাসে পুলিশের কার্যক্রম নিয়ে সমালোচনা হলেও হারানো সুনাম পুনরুদ্ধারে নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। মানুষের কাছে গিয়ে তাদের কথা শোনা এবং সর্বোচ্চ সেবা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি সেই উদ্যোগগুলোর মধ্যে অন্যতম।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, “বিশ্বায়নের যুগে পুলিশবিহীন সমাজ ব্যবস্থা কল্পনা করা যায় না। আমি ডিএমপিকে অনন্য উচ্চতায় নিতে চাই। সহকর্মীদের উদ্দেশে বলবো, আপনারা উদাহরণ সৃষ্টি করুন। জনগণের সামনে এমন আচরণ, নৈতিকতা ও পেশাদারিত্ব প্রদর্শন করুন যা অনুকরণীয় হয়ে থাকবে।”

তিনি আরও বলেন, পুলিশ কর্মকর্তাদের আচার-আচরণ সাধারণ মানুষের কাছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ। পুলিশকে শুধু অপরাধীদের গ্রেপ্তার নয়, ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতেও গুরুত্ব দিতে হবে। তিনি সতর্ক করেন যে, কোনো খুনের ঘটনা অপমৃত্যু হিসেবে রেকর্ড করা হলে সংশ্লিষ্ট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কঠোর শাস্তির মুখোমুখি হবেন।

ডিএমপি কমিশনার ছিনতাইকারী, চাঁদাবাজ এবং কিশোর গ্যাংয়ের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন। এসব অপরাধ প্রতিরোধে তিনি শিক্ষক, ছাত্র, শ্রমিক, ব্যবসায়ীসহ সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষকে নিয়ে সিটিজেন ফোরাম গঠনের পরিকল্পনার কথা জানান।

পুরস্কৃত শ্রেষ্ঠ পুলিশ বিভাগ ও কর্মকর্তারা
মাসিক অপরাধ পর্যালোচনা সভায় ডিএমপির বিভিন্ন বিভাগ এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাজের স্বীকৃতি দেওয়া হয়।

শ্রেষ্ঠ ক্রাইম বিভাগ: মিরপুর বিভাগ।
শ্রেষ্ঠ থানা: উত্তরা পশ্চিম থানা।
শ্রেষ্ঠ সহকারী কমিশনার: উত্তরা জোনের সাদ্দাম হোসাইন।
শ্রেষ্ঠ এসআই: যৌথভাবে নির্বাচিত বনানী থানার কাজী জাহিদুর রহমান ও মিরপুর মডেল থানার ওসমান গনি।
শ্রেষ্ঠ এএসআই: মিরপুর মডেল থানার রুহুল আমিন ও কদমতলী থানার সাইফুল ইসলাম।
অস্ত্র উদ্ধারে প্রথম হয়েছেন আদাবর থানার এসআই জাহিদ হাসান। মাদকদ্রব্য উদ্ধারেও শ্রেষ্ঠ নির্বাচিত হয়েছেন কোতয়ালী থানার এসআই মলয় বসু।

গোয়েন্দা বিভাগের মধ্যে সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (দক্ষিণ) শ্রেষ্ঠ হয়েছে। শ্রেষ্ঠ গোয়েন্দা টিম লিডার নির্বাচিত হয়েছেন অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মো. ফজলুল করিম।

ট্রাফিক বিভাগের মধ্যে শ্রেষ্ঠ হয়েছে উত্তরা বিভাগ। শ্রেষ্ঠ ট্রাফিক ইন্সপেক্টর নির্বাচিত হয়েছেন বাড্ডা ট্রাফিক জোনের মো. দেলোয়ার হোসেন।

সভায় ডিএমপির ক্রাইম, গোয়েন্দা, ট্রাফিকসহ বিভিন্ন বিভাগের অতিরিক্ত কমিশনার এবং থানার ওসি থেকে শুরু করে বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সভায় আরও উল্লেখ করা হয়, সেবা ও দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *